আমাদের ভবিষ্যৎ ও নিরাপত্তা বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িত: ভারত

Print Friendly, PDF & Email

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের নিরাপত্তাসহ দেশটির ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের সাথে জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা। তার মতে, দুই দেশ একসঙ্গে অনেক কিছু করতে পারে। এর মধ্যে পুনরায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং সুন্দরবনের সংরক্ষণের মতো বিষয়গুলোতেও অনেক কিছু করার রয়েছে বলে মত তার। মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস নাউ।

ভারতীয় ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তার নাম স্মিতা পন্ত। তিনি ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বাংলাদেশ, মিয়ানমার) হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে মঙ্গলবার রাজধানী নয়াদিল্লিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ওই অনুষ্ঠানে স্মিতা পন্ত বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছিল, কিন্তু খুনিরা তার আদর্শকে পরাজিত করতে পারেনি। ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর সমকক্ষ ব্যক্তিত্ব খুব কমই আছে এবং আজ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘জনগণ মৌলবাদকে প্রত্যাখ্যান করেছে। বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে অবস্থান গড়ে নেওয়ার পথে রয়েছে এবং এই দেশটি কার্যত অন্যান্য দেশের তুলনায় জাতিসংঘে বেশি শান্তিরক্ষী পাঠিয়ে অবদান রাখছে।’

আলোচনার শুরুতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান বঙ্গবন্ধুর বঞ্চিত ও দরিদ্রদের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের কথা বলেন, ‘যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য একটি মডেল হয়ে আছে। সাম্য, ন্যায়বিচার, মৌলিক মানবাধিকার এবং বিশেষ করে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের জন্য লড়াইয়ে তিনি তার অভিজ্ঞতা থেকে তার রাজনৈতিক দর্শন গড়ে তুলেছিলেন। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে দেওয়া নিজের প্রথম ভাষণে বঙ্গবন্ধু সবার জন্য শান্তি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার অত্যধিক গুরুত্বের প্রতি ইঙ্গিত করেছিলেন।’

একই কণ্ঠ প্রতিধ্বনিত হয়েছিল ১৯৭৩ সালে আলজিয়ার্সে অনুষ্ঠিত ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনে। সেখানে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘অত্যাচারী এবং নিপীড়িত; এই দুই ভাগে দুনিয়া বিভক্ত…। যারা নিপীড়িত আমরা তাদের পক্ষে দাঁড়াই এবং যারা নিপীড়ন থেকে মুক্তির জন্য ন্যায়সঙ্গত সংগ্রাম করছে, আমরা তাদেরও পাশে আছি।’

মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, কিন্তু এই মহান ব্যক্তির নীতি ও আদর্শকে তারা শেষ করে দিতে পারেনি, মুছে দিতে পারেনি। তার শিক্ষা, মতাদর্শ এবং চেতনা আমাদের হৃদয়ে গভীরভাবে গেঁথে আছে।’ হাইকমিশনার এসময় দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশে দায়িত্বপালন করা সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ এদিনের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক সূচকগুলো পাকিস্তানের চেয়ে তো বটেই কিছু ক্ষেত্রে ভারতের চেয়েও ভালো। এমন একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন বঙ্গবন্ধুই দেখেছিলেন এবং ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের স্বপ্নও দেখেছিলেন তিনি।