এবার ম্যারাথনে অংশ নিল মানবসদৃশ রোবট!

Print Friendly, PDF & Email

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : মানুষের পাশাপাশি এবার রোবটও অংশ নিয়েছে ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতায়। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের ইজহুয়াং হাফ-ম্যারাথনে শনিবার (১৯ এপ্রিল) মানুষের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছে ২১টি হিউম্যানয়েড বা মানবসদৃশ রোবট। এবারই প্রথমবারের মতো ২১ কিলোমিটারের (১৩ মাইল) এই আনুষ্ঠানিক দৌড় প্রতিযোগীতায় মানুষ ও রোবটকে পাশাপাশি দৌড়তে দেখা গেল।

বিভিন্ন আকৃতি ও গঠনের এই রোবটগুলোকে তৈরি করেছে ড্রয়েডইউপি ও নোটিক্স রোবটিক্সের মতো চীনের স্থানীয় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এদের মধ্যে কিছু রোবটের উচ্চতা ১২০ সেন্টিমিটারের (৩ ইঞ্চি ৯ ফিট) কম এবং অন্যগুলোর উচ্চতা ১ দশমিক ৮ মিটার (৫ ইঞ্চি ৯ ফিট) পর্যন্ত। নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি দাবি করেছে যে, তাঁদের তৈরি রোবট ঠিক মানুষের মতো দেখতে এবং এতে নারীসুলভ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। পাশাপাশি এটি চোখ টিপ দিতে পারে এবং হাসতে পারে।

এই দৌড় প্রতিযোগিতাকে সামনে রেখে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাঁদের তৈরি রোবটগুলোকে কয়েক সপ্তাহ ধরে পরীক্ষা করেছে। বেইজিংয়ের কর্মকর্তারা এই ম্যারাথন ইভেন্টটিকে রেসিং কার প্রতিযোগিতার সাথে তুলনা করেছেন। রেসিং কার প্রতিযোগিতায় যেমন ইঞ্জিনিয়ারিং ও নেভিগেশন টিমের প্রয়োজন হয়, ঠিক তেমনি এখানেও এই রোবটগুলোকে ম্যারাথনের জন্য প্রস্তুত করতে একাধিক টিম কাজ করেছে।

‘রোবটগুলো খুব ভালোভাবে, স্থিতিশীলভাবে দৌড়চ্ছে…আমার মনে হচ্ছে আমি রোবট ও এআই প্রযুক্তির বিবর্তন প্রত্যক্ষ করছি’- এভাবেই নিজের অনুভূতির কথা জানিয়েছেন ম্যারাথনের একজন দর্শক হি সিশু, যিনি নিজেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করেন।

ম্যারাথনে অংশ নেওয়া রোবটগুলোর সাথে এদের প্রশিক্ষকরাও ছিলেন এবং প্রতিযোগিতা চলাকালেই প্রশিক্ষকরা কয়েকটি রোবটকে ফিজিক্যাল সাপোর্টও দিয়েছেন। কয়েকটি রোবটের পায়ে দৌড়নোর জুতা (রানিং শুজ) ছিল, একটির হাতে আবার ছিল বক্সিং গ্লাভস। এদের মধ্যে আরেকটি রোবটের মাথায় ছিল লাল রঙের হেডব্যান্ড, যেখানে চীনা ভাষায় লেখা ছিল ‘বাউন্ড টু উইন’, অর্থাৎ অবশ্যই জিতবে।

এমন বাহারি সব রোবটের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই ম্যারাথনটি একেবারেই অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা দিয়েছে দর্শকদের। এআই প্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহীদের পাশাপাশি সাধারণ দর্শকরাও বিমোহিত হয়েছে এদের দেখে।

প্রতিযোগিতায় রোবটদের মধ্যে বিজয়ী হয়েছে ‘তিয়াংগং আলট্রা’। এটি তৈরি করেছে বেইজিং ইনোভেশন সেন্টার অব হিউম্যান রোবটিক্স। ২১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে রোবটটি সময় নিয়েছে ২ ঘন্টা ৪০ মিনিট। তবে মানব প্রতিযোগীদের মধ্যে বিজয়ী ব্যক্তি দৌড় সম্পন্ন করেছেন মাত্র ১ ঘন্টা ২ মিনিট সময়ে।

বোঝাই যাচ্ছে, মানুষের তুলনায় রোবট অন্য অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকলেও দৌড়নোর ক্ষেত্রে এখনও অনেকটা পথ পাড়ি দেওয়া বাকি মানবসদৃশ মেশিনের।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স