কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের দানবাক্সে প্রতি তিন মাস পর পর কোটি কোটি টাকা পাওয়া যায়, এটি সবার জানা। কিন্তু এ পর্যন্ত কি পরিমান টাকা পাওয়া গেছে- এ তথ্য সবার কাছে এতোদিন ছিল অজানা। প্রশাসনও বিষয়টি প্রকাশ করেনি। এমনকি সাংবাদিকরা বারবার চেষ্টা করেও মসজিদ পরিচালনা কমিটির কাছ থেকে এ তথ্য বের করতে পারেননি। অবশেষে জানা গেল সেই তথ্য।
শনিবার (১২ এপ্রিল) দানবাক্স খোলার পর পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডিসি ফোজিয়া খান নিজেই জানালেন কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে দানের টাকার পরিমান বা ব্যাংকে কত গচ্ছিত আছে। শনিবার দুপুরে পাগলা মসজিদে সাংবাদিকদের কাছে জমা টাকার তথ্য প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি জানান, মসজিদের দান বাক্স থেকে পাওয়া আয় থেকে মসজিদ পরিচালনা, এতিমখানা পরিচালনা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনুদান দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট টাকা কিশোরগঞ্জের রূপালী ব্যাংকে মসজিদের হিসাবে জমা রাখা হয়েছে। তিনি জানান, সকল খরচ বাদে এ পর্যন্ত ব্যাংক হিসাবে জমা আছে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।
জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান আরো জানান, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা দিয়ে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে মসজিদের জন্য বহুতল ভবন ও ইসলামী কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। এছাড়া এ টাকা দিয়ে মসজিদের জমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হবে।’
জানা গেছে প্রতি তিন মাস পর পর পাগলা মসজিদের দান সিন্দুকগুলা খোলা হয়। সবশেষ আজ শনিবার সকালে মসজিদের ১১টি লোহার সিন্দুক খুলে পাওয়া যায় ২৮ বস্তা টাকা। আর এসব টাকা গণনায় অংশ নেন ব্যাংকের ৮০ কর্মচারিসহ সাড়ে ৪শ লোক।
শনিবার ( ১২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীসহ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের নিচতলায় বিভিন্ন স্থানে থাকা দানবাক্সগুলো একে একে খোলা হয়। এরপর প্লাষ্টিকের বস্তাভর্তি টাকা নেওয়া হয় দ্বিতীয় তলায়। মেঝেতে ঢেলে শুরু হয় টাকা গণনার কাজ। টাকা গননা কাজে দিনভর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নেওয়া হয় নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এবার ৪ মাস ১১দিন পর দানসিন্দুক খোলা হয়।
এর আগে, সবশেষ গত ৩০ নভেম্বর দানসিন্দুক থেকে পাওয়া গিয়েছিল ৮ কোটি ২১ লাখ টাকা। এবার আরো একটি দানসিন্দুক বাড়ানো হয়েছে।