বাগেরহাট প্রতিনিধি : সুন্দরবনে লাগা আগুন এখনও থেমে থেমে জ্বলছে। কোথাও দেখা মিলছে ধোঁয়ার কুণ্ডলী, কোথাও আগুনের শিখা। তবে বনবিভাগ বলছে আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আগুনের ঘটনায় গঠন করা হয়েছে একটি তদন্ত কমিটি।
আগুনের বিস্তৃতি রোধে ফায়ার লাইন কেটে বনবিভাগের নিজস্ব সেচ পাম্প দিয়ে পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। আগুনের বিস্তৃতি বনের কতটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে, আগুন কীভাবে লাগল তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি বনবিভাগ।
এদিকে, আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) দিপন চন্দ্র দাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন—ধানসাগর স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা বিপুলেশ্বর দাস ও কলমতেজি টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান ও বনভূমির ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত শনিবার দুপুরে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজি টহল ফাঁড়ি এলাকায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পায় বনবিভাগ।
বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) সাকরিয়া হায়দার আজ রোববার সকালে বলেন, ‘বাগেরহাট, শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ নিয়ে মোট পাঁচটি ইউনিট সুন্দরবন সংলগ্ন ভোলা নদীর তীরে অবস্থান করছে। বনবিভাগের নিজস্ব সেচ পাম্প দিয়ে পানি ছেটানোর কাজ চলছে। আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা পাইপলাইন বসিয়ে কাজ শুরু করেছি। সুন্দরবনের যে এলাকায় আগুন লেগেছে সেখান থেকে মরা ভোলা নদীর দূরত্ব অন্তত তিন কিলোমিটার। এত দূরত্বে পানি নিয়ে তা দিয়ে আগুন নেভাতে দারুণ বেগ পেতে হচ্ছে।’
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম রোববার সকালে বলেন, ‘শনিবার দুপুর একটার দিকে বনকর্মীরা চাঁদপাই রেঞ্জের কলমতেজি টহল ফাঁড়ি এলাকায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পায়। পরে বনকর্মীরা সেখানে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। আগুনের বড় কোনো শিখা নেই, আছে শুধু ধোঁয়া। আমাদের নিজস্ব সেচ পাম্প দিয়ে আগুন নেভাচ্ছি। শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত আমরা আগুন নেভানোর কাজ করি। যেখানেই ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পাচ্ছি সেখানে পানি ছিটানো হচ্ছে। এখন আগুনের যে ধরণ দেখছি তাতে ভয়ের কিছু দেখছি না, আগুন অন্তত ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
এরই মধ্যে এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম।
প্রসঙ্গত, গত বছর ৪ মে চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া এলাকায় আগুন লাগে। এতে বনের পাঁচ একর এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।