উরুগুয়েকে হারিয়ে বিশ্বকাপের মূল মঞ্চের পথে আর্জেন্টিনা

Print Friendly, PDF & Email

স্পোর্টস ডেস্ক : চোটের কারণে দলে নেই লিওনেল মেসি। একই কারণে নেই লাওতারো মার্তিনেস, পাওলো দিবালা, আলেহান্দ্রো গার্নাচোর মতো তারকারা। তার ওপর ম্যাচটা উরুগুয়ের ঘরের মাঠে। এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বরে শেষবারের দেখায় নিজেদের মাঠে ২-০ ব্যবধানে হেরেছিল আলবিসেলেস্তেরা। তাই আর্জেন্টিনাকে যে আজ বড় পরীক্ষা দিতে হবে, সেটা অনুমিতই ছিল। তবে সে পরীক্ষায় ঠিকই উতরে গেছে আর্জেন্টিনা।

থিয়াগো আলমাদার দারুণ এক গোলে কনমেবল অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ১-০ ব্যবধানের জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। বক্সের বাইরে থেকে দূরপাল্লার শটে যেভাবে গোলটা করেছেন আলমাদা, তা আর্জেন্টিনা সমর্থকদের মনে থাকবে অনেকদিন!

এ অঞ্চলের পয়েন্ট টেবিলে আগে থেকেই সবার ওপরে ছিল লিওনেল স্কালোনির দল। আজকের জয়ে শীর্ষস্থানটা আরও পাকাপোক্ত হলো আলবিসেলেস্তেদের। বর্তমানে ১৩ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট আর্জেন্টিনার। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইকুয়েডরের চেয়ে আর্জেন্টিনা এগিয়ে ৬ পয়েন্টে। আর সমান ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে উরুগুয়ে। ২১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে ব্রাজিল।

বাছাইপর্বের পরের ম্যাচে আগামী বুধবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের মুখোমুখি হবে স্কালোনির দল। আজকের জয়ে সুপার ক্লাসিকোর আগে আর্জেন্টিনার প্রস্তুতিটা হলো ভালো ভাবেই।

অবশ্য উরুগুয়ের মাঠ স্তাদিও সেন্তেনারিওতে আর্জেন্টিনার কাজটা মোটেও সহজ ছিল না। বল দখলে তুলনামূলক এগিয়ে ছিল মার্সেলো বিয়েলসার শিষ্যরা। তবে কার্যকর আক্রমণে উরুগুয়ের রক্ষণকে বেশি তটস্থ রেখেছে স্কালোনির দলই।

প্রথমার্ধে অবশ্য কোনো দল গোল করতে পারেনি। এ সময় উরুগুয়ে যেখানে মোটে একটা শট নিয়েছে, সেখানে আর্জেন্টিনা শট নিয়েছিল ৫টি। প্রথমার্ধ তুলনামূলক ম্যাড়মেড়ে কাটলেও দ্বিতীয়ার্ধে জমে ওঠে ম্যাচ। দুদলই আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলতে থাকে।

এর মধ্যে ম্যাচের ৬১ মিনিটে প্রায় গোলের কাছে গিয়েছিল উরুগুয়ে। তবে আর্জেন্টিনার জমাট রক্ষণ ভাঙতে পারেননি নুনিয়েস-বেন্টাকুররা। পরের মিনিটেই পাল্টা আক্রমণে ওঠে আর্জেন্টিনা। আলভারেসের পাস থেকে সিমিওনের জোরালো শট ঠেকিয়ে দেন উরুগুয়ে গোলকিপার সের্হিও রচেত।

পরের কয়েক মিনিট টানা আক্রমণ চালাতে থাকে আর্জেন্টিনা। এর ফলও পেয়ে যায় হাতে নাতে। ম্যাচের ৬৮ মিনিটে আর্জেন্টিনার সমর্থকদের আনন্দে ভাসান আলমাদা।

মাঠের বাঁ প্রান্তে আলভারেস যখন আলমাদাকে পাস দিলেন, তখন ২৩ বছর বয়সী লেফট উইঙ্গার ডি বক্সের অনেকটা বাইরে। বক্সের ভেতর উরুগুয়ের ৬ ফুটবলার। এর মধ্যে একজন ছুটে যাচ্ছিলেন আলমাদার দিকে। তবে তার আগেই দূরের পোস্ট লক্ষ্য করে ডান পায়ে দারুণ এক শট নিয়ে বসেন আলমাদা। উরুগুয়ে গোলকিপার ঝাঁপিয়েছিলেন বটে। তবে বল চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।

ম্যাচের বাকি অংশে আর্জেন্টিনা অবশ্য আর আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেনি। শেষ দিকে উরুগুয়ে চেষ্টা চালালেও আর্জেন্টিনার রক্ষণ ভাঙতে পারেনি। তাতে শেষ পর্যন্ত স্বস্তির জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।

তবে আর্জেন্টিনার একমাত্র অস্বস্তি হতে পারে নিকো গঞ্জালেসের লাল কার্ড। ম্যাচের যোগ করা সময়ের একদম শেষ মুহূর্তে বলের দখল নিতে গিয়ে দারউইন নুনিয়েসের মাথায় কিক করে বসেন আর্জেন্টাইন রাইট উইঙ্গার। এ ঘটনায় গঞ্জালেসকে সরাসরি লাল কার্ড দেখান রেফারি হুয়ান গেব্রিয়েল বেনিতেস। এর একটু পরেই ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজে। আর জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।