স্টাফ রিপোর্টার : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সব সংস্কারে হাত দেয়ার দরকার নেই বলে মত দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য যেসব সংস্কার দরকার সেগুলো এই সরকারের দায়িত্ব বলে মনে করেন তিনি। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক যে সংকট আছে সেগুলোর সমাধান নির্বাচিত করবে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরে নিজ বাসভবনে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি জেলা বিএনপি কার্যালয়ের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষিতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হলো অবাধ নিরপেক্ষ একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন। এই সরকারের প্রধান কাজ হবে, নির্বাচনের জন্য লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড গড়ে তোলা।
ফখরুল বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে বিভক্ত করেছে গত ১৮ বছরে, এখন দরকার একটি জাতীয় ঐক্যের। ছাত্র-জনতার যুগপৎ আন্দোলন এবং গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। এখন সরকারের উচিত হবে জনগণ কী চায়, জনগণের সমস্যা চিহ্নিত করে সংস্কারগুলোতে দ্রুত হাত দেওয়া।
বিএনপি এই সরকারকে সহযোগিতা করছে এবং সবাইকে সহযোগিতার আহ্বান জানান দলটির মহাসচিব। তিনি বলেন, আন্দোলনের অংশীদার আমরাও। এই সরকার ব্যর্থ যেন না হয়। যারা বাংলাদেশের শত্রু তারা যেন কোনোভাবেই সুযোগ না পায়।
সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার তাগিদ দিয়ে ফখরুল বলেন, নির্বাচনের জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। আমাদের চিঠি দিয়েছে, আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। সবচেয়ে বড় বিষয় অবাধ ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন।
ফখরুল বলেন, আমরা আশা করি, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সকল জঞ্জালকে দূর করে দেশে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করবে যে, পরিবেশে সুষ্ঠু ও সকলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনগণের একটা পার্লামেন্ট তৈরি হবে। সংস্কার আমরাও চাই। আমরা মানুষের ওপর যাতে অন্যায় অত্যাচার না হয়, সে অবস্থায় দেখতে চাই। এখানে আর যেন শিশুদের ওপর গুলি করে হত্যা করা না হয়। যে কাজগুলো একটি সুন্দর, সন্ত্রাসবিহীন ভবিষ্যৎ জন্ম নেয়।
এ সময় বিএনপি মহাসচিব শেখ হাসিনার সমালোচনা করে বলেন, আমরা আরেকটা বিপর্যয় আশা করি না। আমাদের মাথার ওপর এখনো বিপদ আছে। কারণ ফ্যাসিবাদের প্রধান হোতা ভারতে অবস্থান করছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের অর্জন ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য এখনো কিছু ব্যক্তি চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে ওঠা সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নিজস্ব এখতিয়ারে কাজের সুবিধার্থে উপদেষ্টা নিয়োগ করবেন। তবে সেক্ষেত্রে আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। তারা যেন বিতর্কিত না হয়।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহসভাপতি আল মামুন আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম শরিফ, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন, জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মাহেবুল্লাহ আবু নুরসহ জেলা বিএনপির নেতারা।