গাজীপুরে গৃহবধূ খুন, রক্তাক্ত দা উদ্ধার

Print Friendly, PDF & Email

গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় এক নারীকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরমী বাজারের কামারপট্টি এলাকার গোপাল মিস্ত্রির বাড়িতে সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাত পৌনে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান।

নিহত ২৪ বছর বয়সী স্মৃতি রাণী পাল শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া পশ্চিম খণ্ড গ্রামের কেশব চন্দ্র সরকারের ছেলে কাব্য সরকারের স্ত্রী।

ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর থানার দৌলতপুর গ্রামের সুনীল পালের মেয়ে স্মৃতির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

তবে কী কারণে এবং কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। ঘটনার সময় স্মৃতির বসত বাড়ির দক্ষিণ পাশের একটি ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন স্থানীয় গোপাল মিস্ত্রির স্ত্রী রূপকোনা।

তিনি বলেন, “প্রতিদিন ভোরে আমি বাজারের মন্দিরে পূজা দেই। তাই রাতে একটু আগেই ঘুমিয়ে যাই। আমি যখন ঘুমের প্রস্তুতি নিয়ে বিছানায় শুয়েছিলাম, হঠাৎ স্মৃতি দিদা বলে চিৎকার দেয়।

“দ্রুত ঘরের বাইরে গিয়ে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় বারান্দায় বসে থাকতে দেখি। কাছে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সে লুটিয়ে পড়ে।”

বাবার সঙ্গে পারিবারিক বিরোধের কারণে স্ত্রী ও সন্তানসহ স্বামী কাব্যের সঙ্গে স্মৃতি বরমী বাজারের কামারপট্টিতে নানার বাড়িতে থাকতেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

স্মৃতির প্রতিবেশী শ্রীপুর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুমন বলেন, “রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে গোপাল মিস্ত্রির বাড়িতে হঠাৎ চিৎকার চেঁচামেচি শুনে সেখানে যাই। তখন স্মৃতিকে রক্তাক্ত অবস্থায় বারান্দায় পড়ে থাকতে দেখি।

“তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”

স্মৃতির বাবা সুনীল পাল বলছিলেন, “আড়াই বছর আগে পারিবারিক সম্মতিতে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। বছর খানেক পর তার সংসারে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। সোমবার রাত আনুমানিক সোয়া ৯টার দিকে স্মৃতির সঙ্গে আমার স্বাভাবিক কথা হয়। তখন সে জানিয়েছিল যে, তার স্বামী কাব্য সন্ধ্যায় ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে।

“এরপর রাত ১০টায় কাব্য ফোন করে স্মৃতির কিছু হয়েছে বলে আমাদের জানায়। তখন তাৎক্ষণিকভাবে আমি শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে স্মৃতির মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারি।”

ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুদেব চক্রবর্তী বলেন, রাত ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে স্মৃতিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার ঘাড়ে এবং ডান হাতের কব্জির কাছাকাছি অংশে ধারালো কোনো কিছুর আঘাতের গভীর ক্ষত দেখা গেছে। পরে তার লাশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এদিকে ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা ধারালো নতুন দা এবং এক জোড়া জুতা উদ্ধারের কথা জানিয়েছেন ওসি জয়নাল আবেদীন। তিনি বলেন, নিহতের স্বামীসহ দুজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।