ছুটির দিনে বাণিজ্য মেলায় উপচেপড়া ভিড়

Print Friendly, PDF & Email

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : শুরুর প্রথম ছুটির দিনে জমে উঠেছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনীকেন্দ্রে শুরু হওয়া ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৮তম আসর। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল থেকেই মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় থাকলেও বিকেল হতেই তা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এতে খুশি মেলার আয়োজক ও ব্যবসায়ীরা। তাদের ভাষ্য, মাসের শেষ শুক্রবার না হলে ক্রেতাদের চাপ আরও বাড়তো।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিগত দিনগুলোর তুলনায় শুক্রবার সকাল থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। স্টল-প্যাভিলিয়নগুলোতে ক্রেতাদের সংখ্যা কম হলেও প্রাঙ্গণজুড়ে তাদের পদচারণা বেশি।

অ্যালুমিনিয়ামের বিশাল পণ্যের সমাহার নিয়ে বসা দিল্লি অ্যালুমিনিয়ামের বিক্রেতা আমির হোসেন বলেন, গত শনিবার মেলা শুরুর পর থেকে আজ ক্রেতা সবচেয়ে বেশি। তবে মাসের শেষের দিকে অনেকের হাত খালি। আমরা আশা করছি, আগামী মাসের শুরু থেকে বেচাকেনা খুব ভালো হবে।

একাধিক স্টলে কথা বলে জানা গেছে, শুরুর পর থেকে আজকের মত এতো ক্রেতা-দর্শনার্থী দেখা যায়নি। দর্শনার্থী অনেক বেশি বলে বিক্রিও বেড়েছে। তার আশা করছেন আগামী মাসের শুরু থেকে মেলা জমে উঠবে।

মেলায় দেশি-বিদেশি প্যাভিলিয়নগুলোতে ভিড় ছিল লক্ষণীয়। মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দিচ্ছে নানা ধরনের ছাড় ও উপহার। বিভিন্ন কোম্পানির বিক্রয় কর্মীরা বলছেন, প্রতিবছরই মেলা উপলক্ষে সব ধরনের পণ্যে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়। ফলে স্টল-প্যাভিলিয়নে ছুটে আসেন গ্রাহকরা।

প্রতিবার মেলায় বেচা-বিক্রি বাড়ানোর জন্য বিক্রেতারা নানা অফার দিয়ে থাকেন। কোনো কোনো বিক্রেতা একটি পণ্যের সঙ্গে একটি পণ্য ফ্রি দিচ্ছেন। অনেকে তাদের পণ্য প্যাকেজ (১টির সঙ্গে ৫/১০ গিফট) আকারে বিক্রি করছেন। আবার কেউ কেউ পণ্যের মূল্যের উপর সরাসরি ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছেন।

মেলায় ঘুরতে আসা আতিকুর রহমান জানান, মেলায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। আজ অফিস ছুটি ছিল। মেলা ঘুরে দেখছি, কয়েকটা জিনিস কিনবো। পছন্দ হলেই কিনে ফেলবো।

রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছালাউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, এবার মেলায় যাতায়াতে চারদিক থেকে বিআরটিসি বাসসহ গণপরিবহন রয়েছে। ফলে খুব সহজে মেলা ঘুরে যেতে পারেন যে কেউ। ফলে গত বছরের চেয়ে ভালো সাড়া পাওয়া যাবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম আহসান বলেন, বর্তমানে ২৬ একর জায়গার ওপর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আরও ৯ একর জায়গা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। বাণিজ্যমেলায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা নজরদারি চালাচ্ছেন।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যু‌রোর সচিব বিবেক সরকার বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার পরিবেশ সুষ্ঠু, নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন রাখতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছি।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইবিপি) সূত্রে জানা গেছে, এ বছর দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মোট ৩৩০টি, যা গত বছর ছিল ৩৩১টি। এবারের মেলায় ভারত, পাকিস্তান, হংকং, তুর্কিসহ অন্তত ১৮ থেকে ২০টি দেশ থেকে ব্যবসায়ীরা মেলায় অংশগ্রহণ করেছেন। এ আসরে মেলার প্রধান ফটকটি করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেলের আদলে। গত আসরে মেলার বড়দের প্রবেশ ফি ৪০ টাকা থাকলেও এবার তা ৫০ টাকা করা হয়েছে। আর শিশুদের প্রবেশ ফি ২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫ টাকা ধরা হয়েছে। শারীরিক প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রবেশ ফ্রি করা হয়েছে।

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত আর ছুটির দিন রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা চলছে। রাজধানীর ফার্মগেট ও কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মেলায় দর্শনার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা বাস ছাড়বে। এ জন্য ফার্মগেট থেকে ৭০ টাকা ও কুড়িল থেকে ৩৫ টাকা মূল্যের টিকিট কাটতে হবে দর্শনার্থীদের।