‘জননৈতিকতা’ লঙ্ঘনের জন্য ইরানি নারীকে ৭৪টি বেত্রাঘাত

Print Friendly, PDF & Email

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ‘জননৈতিকতা লঙ্ঘন’ করায় ইরানের একজন নারীকে ৭৪টি বেত্রাঘাত করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া দেশটির পোশাকবিধি অনুযায়ী, মাথা ঢেকে না রাখার জন্য তাঁকে জরিমানা করা হয়েছে। ইরানের বিচার বিভাগ এসব তথ্য জানিয়েছে।

গত শনিবার ইরানের বিচার বিভাগের মিজান অনলাইন জানায়, দণ্ডপ্রাপ্ত নারীর নাম রোয়া হেশমতি। তাঁকে দেওয়া ৭৪টি বেত্রাঘাতের সাজা আইন ও শরিয়া অনুযায়ী কার্যকর করা হয়েছে। ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানে সব নারীর গলদেশ ও মাথা ঢেকে রাখা আইন দিয়ে বাধ্যতামূলক করা হয়। তবে পোশাকবিধি লঙ্ঘনের জন্য ইরানে বেত্রাঘাত সচরাচর দেখা যায় না।

২০২২ সালের শেষ দিকে ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। এই বিক্ষোভকালে দেশটিতে পোশাকবিধি লঙ্ঘন বেড়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পোশাকবিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে দমন–পীড়ন বাড়িয়ে দেয় ইরানের কর্তৃপক্ষ।

ইরানের কঠোর ইসলামি পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানে নীতি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন দেশটির কুর্দি তরুণী মাসা আমিনি (২২)। ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি পুলিশি হেফাজতে মারা যান। তাঁর মৃত্যুর জেরে দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে তা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।

বিক্ষোভকালে অনেক নারী বিক্ষোভকারী তাঁদের মাথার স্কার্ফ ফেলে দেন বা পুড়িয়ে দেন। অন্য নারীরাও পোশাকবিধি লঙ্ঘন করতে শুরু করেন। এর জেরে সরকারি দমন–পীড়ন শুরু হয়। কুর্দিকেন্দ্রিক নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হেনগাও জানিয়েছে, বেত্রাঘাতের সাজা পাওয়া নারী হেশমতির বয়স ৩৩ বছর। তিনি কুর্দি বংশোদ্ভূত। হেশমতির আইনজীবী মাজিয়ার তাতাই একটি দৈনিককে বলেছেন, মাথায় স্কার্ফ না থাকার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করার জন্য গত এপ্রিল মাসে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

আইনজীবী মাজিয়ার তাতাই আরও জানান, প্রকাশ্যে নেকাব না পরার জন্য হেশমতিরকে ১২ মিলিয়ন ইরানি রিয়াল জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পোশাকবিধির লঙ্ঘন নজরদারির জন্য প্রকাশ্য স্থানে ক্যামেরা স্থাপন করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা। এ ছাড়া নিয়ম লঙ্ঘনকারী ব্যবসা তাঁরা বন্ধ করে দিয়েছেন। ইরানের পার্লামেন্ট ইতিমধ্যে এমন একটি বিল নিয়ে আলোচনা করেছে, যাতে পোশাকবিধি লঙ্ঘনকারীদের শাস্তি কঠোর করার কথা বলা হয়েছে।