মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেতুলিয়ায়

Print Friendly, PDF & Email

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : বছরের শুরুতেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। সেই সাথে উত্তরের হিমালয় থেকে আসা হিমেল হাওয়ায় দেশের সর্ব উত্তরের জেলাটিতে তীব্র শীতের দাপট শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার থেকে জেলার উপর দিয়ে জুড়ে হিমেল হাওয়া বয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যার পরে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায় পথঘাট সহ চারদিকে। রাত যত গভীর হয় ততই কুয়াশার পরিমাণ বাড়তে থাকে। রাতভর বৃষ্টির মতো ঝরতে থাকে কুয়াশা। সেই সাথে হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা আরো বেড়ে যায়। বুধবার ভোর থেকে মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন গুলো।

তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় উত্তরের এ জেলায় বুধবার তাপমাত্রা অনেকটা কমায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। সকাল ৯ টায় জেলায় দেশের শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে সকাল ৬ টায় জেলায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিন এবং রাতের তাপমাত্রা ৭ থেকে ২০ ডিগ্রীতে ওঠানামা করছে ।

এই শীতে ইজিবাইক, রিক্সা চালক, দিনমজুর ও পরিবহন শ্রমিক সহ নিম্ন আয়ের মানুষদের ভোগান্তি শুরু হয়েছে। শীতের কারণে সময় মতো কাজে যোগ দিতে পারছেন না তার। শীত নিবারণে আগুন পোহাচ্ছেন জেলার মানুষজন।

বোদা উপজেলার দিনমজুর অলকেশ রায় বলেন, গত দুই দিনের ঠান্ডায় একেবারে কাহিল হয়ে পড়েছি। তীব্র শীতের কারণে সকাল বেলা কাজে যেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কিন্তু কাজে না গেলে খাবো কি। পেটের দায়ে শীতের মাঝেও কাজের খোঁজে বের হতে হচ্ছে।

এদিকে হাসপাতাল গুলোতে প্রতিনিয়তই বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। জ্বর সর্দি কাশি ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট সহ নানা শীত জনিত রোগে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছে বয়স্ক শিশুরা। গড়ে তিন শতাধিক রোগী হাসপাতালের বহিঃ বিভাগের চিকিৎসা নিয়ে চলে যাচ্ছেন। এছাড়া গড়ে অন্তত ৭০ জন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। বেডে জায়গায় না হয় মেঝেতে বিছানা করে রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছে। রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।

সদর উপজেলার নুনিয়া পাড়া এলাকার আমিনা বেগম বলেন, ঠান্ডা লেগে দুই দিন ধরে ছেলের ডায়রিয়া। মাঝে মাঝে বমিও করছিল। এখন চিকিৎসা নিতে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। তবে আগের তুলনায় আমার ছেলে কিছুটা সুস্থ হয়েছে।

তবে জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহ জুড়ে আরো শীতের তীব্রতা আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তেতুঁলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ। তিনি বলেন, হিমালয়ে থেকে আসা হিমেল হাওয়ায় জেলায় শীতের তীব্রতা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বুধবার রোদের দেখা মিললেও কাঙ্খিত উত্তাপ ছড়াতে না পারায় শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে। সেই সাথে চলতি মাসে জেলার উপর দিয়ে দুটি শৈতপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানা তিনি।