স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত দ্বিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী জ্বালানি, কৃষি ও স্বাস্থ্যখাতে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী দুই দেশ। আজ বুধবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর মধ্যে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফকালে এ কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারের (জেসিসি) কাকাতুয়া কক্ষে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) ৪৩তম শীর্ষ সম্মেলন এবং ১৮তম ‘পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন’-এর এক ফাঁকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে জ্বালানি ও স্বাস্থ্য খাতে দুই দেশের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে উল্লেখ করে উভয় দেশের জনগণের কল্যাণে যৌথভাবে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে বলে বৈঠকে বলা হয়।বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক মানের ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, সিরামিক ও তৈরি পোশাক আমদানির আহ্বান জানিয়ে ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগকারীদের এখানে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। কারণ, গত এক দশকে দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে।
রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দুই দেশের উন্নতির জন্য উভয় দেশের চিকিৎসকদের সনদকে স্বীকৃতি দেওয়ার পারস্পরিক সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করার উদ্যোগ এখনও চলছে।’ বাংলাদেশ সারা দেশে ৫১টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) এবং ৩৯টি হাই-টেক পার্ক ও অন্যান্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়া আগ্রহী হলে বাংলাদেশ তাদের জন্য নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল মনোনীত করতে পেরে খুশি হবে।’
এ দশকের শেষ নাগাদ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংযোগস্থলে অবস্থিত একটি উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হতে চায় উল্লেখ করে বিনিয়োগের সুযোগ কাজে লাগাতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন মো. সাহাবুদ্দিন।
রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, শিগগিরই ঢাকা ও জাকার্তা বা বালির মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ স্থাপন করা হবে এবং দুই দেশের সমুদ্র বন্দরের মধ্যে উপকূলীয় জাহাজ চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি এ সংকট নিরসনে ইন্দোনেশিয়ার সরকার ও জনগণের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, ‘মানবিক কারণে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।’
এ প্রসঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুটি আসিয়ান বৈঠকে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আসিয়ান সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনারের সদস্যপদ নিশ্চিত করতে আসিয়ান চেয়ারম্যান এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের আরও সহযোগিতা কামনা করেন।’
বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে বিদ্যমান ক্রমবর্ধমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবদ্দশায় বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী প্রথম মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে এর সম্পর্ককে অত্যন্ত মূল্য দেয় বাংলাদেশ।’