স্টাফ রিপোর্টার : সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিভিন্ন দেশের কয়েকজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের সদস্যের লেখা খোলাচিঠি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। উক্ত খোলাচিঠির বক্তব্য বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীন বিচার বিভাগের ওপর স্পষ্ট হুমকি হিসেবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। চিঠিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আদালতে দায়েরকৃত চলমান মামলাসমূহের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের আহয়ান জানানো হয়েছে। দেশের বিবেকবান নাগরিক হিসেবে আমরা বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ার ওপর এ-ধরনের অযাচিত হস্তক্ষেপের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
উল্লিখিত খোলাচিঠির প্রেক্ষিতে বেশ কিছু আইনি ও নৈতিক প্রশ্ন সামনে চলে আসে। বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৪(৪) অনুযায়ী বিচারকগণ তাদের বিচারিক কাজে সম্পূণভাবে স্বাধীন। সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রপরিচালনায় যুক্ত কারোরই বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার কোনো এখতিয়ার নেই। উল্লিখিত চিঠির বক্তব্য বাংলাদেশের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা স্বীকৃত শ্রমিকদের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি। এই চিঠিতে ‘নিরপ্লে’ বিচারকের মাধ্যমে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বিচারের যে আহবান জানানো হয়েছে, তা বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থাকে হেয় প্রতিপন্ন করার সামিল বলে আমরা মনে করি।
মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সকল নাগরিকই আইনের দৃষ্টিতে সমান। লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অজি এই সংবিধানে সকলেরই আইনি সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ড. মুহাম্মদ ইউনসের বিচারকার্য বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুসারে ও স্বাধীনভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে ‘বিচারিক হেনস্তা’র অভিযোগ অমূলক ও অনভিপ্রেত। পাশাপাশি ড. ইউনূস বাংলাদেশের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে সবসময়ই দেশে ও বিদেশে ব্যক্তিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সকল কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছেন।
প্রেরিত খোলাচিঠিতে স্বাøরকারী ব্যক্তিবর্গের নিজ নিজ দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। আমরা প্রত্যাশা করি, বিবৃতিদাতাগণ তাঁদের নিজ নিজ দেশের মতো বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকেও নিজস্ব আইন অনুযায়ী চলার সুযোগ দেবেন এবং সম্মান করবেন।