সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ সদরে গৃহবধু শিউলী খাতুন (২৩) ও শাহজাদপুরে স্কুল ছাত্র শাহাদৎ হোসেন (৭) হত্যা মামলায় ৩ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ১ বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০জুন) দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ এরফান উল্লাহ এই কারাদণ্ডাদেশের আদেশ দেন। দন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন, নাটোর জেলার সিংড়া থানার ক্ষিরপোতা এলাকার হাসান তালুদারের ছেলে মাসুদ ওরফে নুরনবী (৩২) ও সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের জজ মিয়ার ছেলে মনিরুল ইসলাম (২৮) ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ব্রাহ্মনগাঁতি গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে সাদ্দাম হোসেন (৩৩)।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার রাশেদুল ইসলাম ও পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এপিপি ওয়াছ করোনী লকেট।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শিউলি খাতুনের সাথে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ব্রাক্ষনগাতী গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে সাদ্দাম হোসেনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।এক পর্যায়ে সাদ্দাম হোসেন শিউলি খাতুনকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এতে শিউলির বাবা হাসান তালুকদার বিয়ের প্রস্তাবে রাজী না হয়ে শিউলি খাতুনকে অন্যত্র বিয়ে দিলে সাদ্দাম হোসেন হাসান তালুকদারের উপর ক্ষিপ্ত হন। বিয়ের কয়েকদিন পর শিউলি খাতুন বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসলে আসামি সাদ্দাম হোসেন ও মাসুদ নুরনবী পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১০ সালের ২০ নভেম্বর সন্ধ্যায় হাসান তালুকদারের বাড়িতে এসে শিউলি খাতুনকে ফুসলিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। পরে তারা শিউলি খাতুনকে সদর থানাধীন রাজিবপুর বিলের ধানী জমিতে নিয়ে গলা কেটে জবাই করে হত্যা করেন। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলা চলাকালে ১৮ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত। স্বাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আজ আদালতের বিচারক ছাদ্দাম হোসেন ও মাসুদ নুরনবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। দন্ডপ্রাপ্ত সাদ্দাম হোসেন ও মাসুদ নুরনবী পলাতক রয়েছে। আপরদিকে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ২০১৯ সালের ১৯ মে পারিবারিক কলোহের জেরে শাহাদৎ হোসেন (৭) নামে এক স্কুল ছাত্রকে তুলে নিয়ে হত্যা করে আসামি মনিরুল ইসলাম। পরে তারা স্কুল ছাত্রের লাশ করতোয়া নদীর পাশে শ্যালো মেশিনের ড্রেনে ভেতর রেখে কচুরীপানা দিয়ে ঢেকে রাখে। পরে পুলিশ স্কুল ছাত্রে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। স্কুল ছাত্র শাহাদৎ হোসেন বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের চন্দনগাতী গ্রামের আসাদুলের ছেলে। বেলকুচি থেকে তাকে তুলে নিয়ে শাহজাদপুরে হত্যা করা হয়।