স্টাফ রিপোর্টার : দুর্নীতিবাজদের টলারেট করা হবে না। দুর্নীতি-অর্থ আত্মসাতের বিরুদ্ধে আদালতের অবস্থান কঠোর। তাদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না। প্রয়োজনে কোর্ট থেকে সরাসরি জেলে ঢুকায়ে দেয়া হবে।বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) ৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাতের বিষয়ে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল না করায় আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করার পাশাপাশি এমন মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে করা আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৯ জুলাই সময় নির্ধারণ করেছেন।
আদালত বলেছেন, এতো টাকা কি বাতাসে খেয়েছে? কারা এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত, কারা এই টাকা আত্মসাৎ করেছে সুনির্দিষ্ট করে তাদের নাম দিন। দুর্নীতিবাজদের টলারেট করা হবে না। দুর্নীতি-অর্থ আত্মসাতের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কঠোর। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে কোর্ট থেকে সরাসরি জেলে ঢুকায়ে দেব।
আদালতে বিসিআইসির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোল্লা হাবিব। দুদকের পক্ষে শুনানি খুরশিদ আলম খান। পরে আদালত পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৯ জুলাই সময় নির্ধারণ করেন।
এর আগে গত ৫ জুন ৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাতের বিষয়ে বিসিআইসিকে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। পাশাপাশি ৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাতের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি দুদককে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
‘৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাৎ’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে ৫ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আদালত এ আদেশ দেন। প্রতিবেদনের একাংশে বলা হয়, সরকারিভাবে আমদানি করা ৭২ হাজার মেট্রিক টন রাসায়নিক সার বন্দর থেকে খালাসের পর গুদামে পৌঁছে না দিয়ে আত্মসাৎ করেছে পরিবহনের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোটন ট্রেডার্স। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৫৮২ কোটি টাকা।
মেসার্স পোটন ট্রেডার্স সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। কামরুল আশরাফ খান সার ব্যবসায়ীদের সংগঠন, বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) সভাপতি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, তিনিই মূলত দেশে সারের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন।
পোটন ট্রেডার্স যে সার আত্মসাৎ করেছে, তা উঠে এসেছে সারের আমদানিকারক শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি প্রতিষ্ঠান রসায়ন শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) দুটি তদন্তে। সারগুলো খালাস হয়েছিল ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ১৫ মে’র মধ্যে । সার সরবরাহ না করার পর সাত মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি বিসিআইসি। সর্বশেষ গত ২০ ডিসেম্বর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে বিসিআইসির পক্ষ থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়।