জামায়াতকে মাঠে নামানোর বিষয়টি রাজনৈতিক: কৃষিমন্ত্রী

Print Friendly, PDF & Email

স্টাফ রিপোর্টার : জামায়াতকে মাঠে নামানোর বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, সময়ই এটি আমাদের বলে দেবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। রোববার (১১ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে জার্মান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জামায়াতকে মাঠে নামানো নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এটি রাজনৈতিক ব্যাপার। রাজনৈতিক কারণে, দেখা যাক। এটা একটা পলিটিক্যাল ডিসিশন, এটি সময়ই আমাদের বলে দেবে। তারা রাজনৈতিক দল, হাইকোর্টের রায় ছিল সংবিধানের সঙ্গে তাদের গঠনতন্ত্র সাংঘর্ষিক, গ্রহণযোগ্য না। এই প্রেক্ষিতেও তাদের তো অনেক জনগণের মাঝে আছে, সমর্থন আছে। এই পরিস্থিতির আলোকে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। আপনারা একটু অপেক্ষা করেন, আরও দেখবেন কী হয়।

তিনি বলেন, অনেক সময় রাজনীতিতে আমরা অনেক পদক্ষেপ নেই, এটি নিতে হয়। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অনেক প্রতিকূলতার মাঝে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র সুপরিকল্পিতভাবে, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করার জন্য, দেশটিকে পাকিস্তানের ধারায় নেওয়ার জন্য অনেক কিছু করেছে। এদেশে জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া যায়নি, বঙ্গবন্ধুর নাম মুখে আনা যায়নি। এমন পরিস্থিতি ছিল যে, সামরিক স্বৈরাচাররা এরশাদের আমলে, জিয়ার আমলে এগুলো করেছে। তখন আমাদের পরিস্থিতির আলোকে অনেক পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। সেটিই আমি বলতে চেয়েছি। আমরা করে করে আজকে এই অবস্থায় এসেছি।

কলকাতা সফরে সেখানকার সাংবাদিকদের সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, কলকাতার লোকজনও চায় আমাদের দেশের নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর হোক সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে। এবং মুক্তিযুদ্ধের শক্তি যাতে ক্ষমতায় আসে সেটা তাদের প্রত্যাশা।

বিএনপির সঙ্গে সংলাপ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, সুযোগ নেই কেন? পৃথিবীতে যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য সংলাপ হতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে তো ওই রকম কোনো… সৃষ্টি হয় নাই যে বিএনপির সাথে কোনো সংলাপ হবে। তারা আন্দোলন করছে, আন্দোলন করতে করতে যখন তারা বিপর্যস্ত হয়ে যাবে তখন তারাই বলবে, একটা কিছু করা দরকার। আমরা সাধারণত তাই করি। পারিবারিক কোনো বিষয়ে, তারা তো ২০০৯ সাল থেকে আন্দোল শুরু করেছে। ২০১৩ সালে করেছে, ২০১৪ সালের নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করেছে, ২০১৫ সালে নয় মাস একটানা হরতা্ল অবরোধ করেছে, গাড়িঘোড়া পুড়িয়েছে। মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ২০১৫ সালের পর থেকে দেশে একটি স্থিতিশীল শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। গত পাঁচ বছরে তেমন কোনো সস্ত্রাস হয়নি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অত্যন্ত শক্তিশালী সংগঠন। তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগের যথেষ্ট ভিত্তি আছে। ইচ্ছা করলেই আন্দোলন করে বিএনপি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে না।

বিএনপি আন্দোলন করে এই সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না উল্লেখ করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিদেশিরা তাদের যত রকম উসকানি দিক, সহযোগিতা করুক বা তারা যেটা প্রত্যাশা করছে, বিদেশিরাও একটা পর্যায়ে গিয়ে বুঝবে ওইভাবে সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব না। আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশের এমন কোনো বাড়ি নেই, এমন কোনো পাড়া নেই যে আওয়ামী লীগের কোনো কর্মী নেই।

তিনি বলেন, আমাদের ভুলভ্রান্তি যে নেই তা নয়। কাজেই এই দলকে ইচ্ছা করলেই ঠেলে দেওয়া কঠিন। বিদেশি কোনো শক্তি বা কেউ যদি আমাদের জাতীয় রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে চায় এবং হস্তক্ষেপ করে আমি মনে করি না তারা সফল হতে পারবে। আমরা রাজনৈতিকভাবে সেটা মোকাবিলা করতে পারব। দৌড়ঝাঁপ আছে, সেটি করতেই পারে। আমি বলেছি, তোমরা সাজেশন দাও। সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। সংবিধানের আলোকে নির্বাচন হতে হবে।