আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতে তুলে নেয়া হচ্ছে ২০০০ রুপির নোট। ব্যাংকগুলিকে এরইমধ্যে ২০০০ রুপির নোট ইস্যু করা বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)। আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এগুলি আইনি দরপত্র হিসাবে বৈধ থাকবে বলে জানিয়েছে আরবিআই। বাজারে থাকা ২০০০ রুপির নোটের মোট মূল্য ৩.৬২ লক্ষ কোটি রুপি। যা দেশটিতে মোট প্রচলিত নোটের মাত্র ১০.৮ শতাংশ । কিন্তু হঠাৎ করেই এই নোট তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত কেনো নিলো দেশটি?
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ২০১৬ সালে নোটবন্দির পরেই বাজারে ২০০০ রুপির নোট এসেছিল। ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট উঠে যাওয়ার পরেই পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০০০ রুপির নোট আনা হয়েছিল। কিন্তু স্থায়ীভাবে এই নোট রাখার পরিকল্পনা ছিল না কখনই। ফলে ২০১৮-১৯ সাল থেকেই ২০০০ রুপির নোট ছাপানো বন্ধ করে দিয়েছিল আরবিআই। বাজারে যে ২০০০ রুপির নোট আছে, তার প্রায় ৮৯ শতাংশই সেই ২০১৭ সালের মার্চের আগে ছাপানো হয়।
একটি ভারতীয় নোটের আয়ু ধরা হয় ৪ থেকে ৫ বছর। নিয়মিত হাতবদল, আর্দ্রতা ইত্যাদি থেকে নোট খারাপ হতে থাকে। ফলে এতদিনে ২০০০ রুপির নোটও খুব বেশি আর বাকি নেই। ২,০০০ রুপির নোট খুব বেশি মানুষ নিয়মিত লেনদেনে ব্যবহারও করেন না। হিসাব বলছে, বাজারে প্রতি ১০০টি নোটের মধ্যে মাত্র ১০ থেকে ১১টি ২০০০ রুপির নোট।
আরবিআই জানিয়েছে, ভারতীয়রা চাইলে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেই গিয়ে ২০০০ রুপির নোট জমা করতে পারবেন। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সুবিধা পাবেন। তাছাড়া ১০টি পর্যন্ত নোট একবারে এক্সচেঞ্জ করে ৫০০ ও ১০০-র নোট নিয়ে যেতে পারবেন বলেও জানানো হয়েছে। এছাড়া আপাতত ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২০০০ রুপির নোট বৈধ থাকবে। ফলে ভারতীয়দের কাছে থাকা রুপি এখনও অকেজো হয়ে যায়নি। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, আরবিআই থেকে আসা ঘোষণার পরে কেউ আর এই নোট নিতে চাইবে না।
এদিকে এই নোট বাতিল নিয়ে ভারতজুড়ে বিতর্কও শুরু হয়েছে। দেশজুড়ে মোদির বিরোধিরা এর জেরে তাকে আক্রমণের নিশানা বানাচ্ছেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালতো সরাসরি মোদির শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কথা শুনিয়েছেন। শুক্রবার (১৯ মে) রাতে টুইট করে তিনি বলেন, প্রথমে বাজারে দুই হাজার রুপির নোট আনা হল। এর ফলে নাকি দুর্নীতি বন্ধ হবে। আবার এখন দু’হাজার রুপির সে নোটগুলি তুলে নেয়া হবে। ঠিক এই কারণেই আমি বলি, প্রধানমন্ত্রীর পড়াশোনা জানা প্রয়োজন। যে কেউ যখন খুশি অশিক্ষিত প্রধানমন্ত্রীকে যা খুশি বলে যাবেন, উনিও কিছু বোঝেন না। সাধারণ জনতাকে সমস্যার মুখে পড়তে হয়।
সমালোচনায় নেমেছেন বাংলাদেশের প্রতিবেশী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তৃণমূল নেত্রী টুইট করে বলেন, প্রিয় ভাইবোনেরা জেগে উঠুন। নোট বাতিলের যে দুর্ভোগ আমাদের সহ্য করতে হয়েছে তা ভোলার নয়। যাদের প্ররোচনায় তা হয়েছে, তাদেরও ক্ষমা করা উচিত নয়। এদিকে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, মোদি বরাবরই আগে কাজ করেন, তার পরে ভাবেন।