শিরোপার আরো কাছে বার্সালোনা

Print Friendly, PDF & Email

স্পোর্টস ডেস্ক : নিজেদের কাজ আগেই সেরে রেখেছিল বার্সেলোনা। ব্যবধান কমিয়ে শিরোপা ধরে রাখার ক্ষীণ সম্ভাবনাটুকু বাঁচিয়ে রাখতে জয়ের বিকল্প ছিল না রিয়াল মাদ্রিদের। কিন্তু ভিনিসিউস জুনিয়র, করিম বেনজেমাদের ছাড়া খেলতে নেমে হেরেই গেল স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা। শিরোপা পুনরুদ্ধারের পথে দুয়ারে পৌঁছে গেল বার্সেলোনা।

প্রতিপক্ষের মাঠে মঙ্গলবার (২ মে) রাতে লা লিগার ম্যাচে ২-০ গোলে হারে রিয়াল। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর সোসিয়েদকে এগিয়ে নেন তাকেফুসা কুবে। শেষ দিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আন্দ্রে বারেনেটিয়া। এদিনই আগের ম্যাচে ওসাসুনাকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপার আরও কাছে পৌঁছে গেছে বার্সেলোনা। ৩৩ ম্যাচে কাতালান ক্লাবটির পয়েন্ট ৮২।

তিন ম্যাচের মধ্যে দ্বিতীয় হারে তৃতীয় স্থানে নেমে যাওয়ার শঙ্কা রিয়ালের সামনে। ৩৩ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৬৮। এক ম্যাচ কম খেলা আতলেতিকো মাদ্রিদ ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে তিনে। বুধবার কাদিসের বিপক্ষে জিতলেই দুই নম্বরে উঠে যাবে তারা। ৩৩ ম্যাচে ৬১ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে রয়েছে সোসিয়েদাদ। এই মুহূর্তে দ্বিতীয় স্থানের দলের চেয়ে ১৪ পয়েন্টে এগিয়ে বার্সেলোনা। অন্য সব ম্যাচের ফল যাই হোক, শেষ ৫ ম্যাচের একটিতে জিতলেই শিরোপা ঘরে তুলবে কাতালান ক্লাবটি।

বেনজেমা স্কোয়াডেই নেই, শুরুর একাদশে ছিলেন না ভিনিসিউস। আক্রমণে শক্তি হারানো রিয়ালই অবশ্য পায় প্রথম সুযোগ। কিন্তু অহেলিয়া চুয়ামেনির দূরপাল্লার শট সহজেই সামলান সোসিয়েদাদ গোলরক্ষক আলেক্স রেমিরো। তিন মিনিট পর দারুণ দক্ষতায় তিনি ব্যর্থ করে দেন এদের মিলিতাওয়ের হেড। রিয়ালের আক্রমণের ঝাপটা সামলে দ্রুত নিজেদের গুছিয়ে নেয় সোসিয়েদাদ। গতিময় ফুটবলে তৈরি করতে থাকে একের পর এক সুযোগ। দ্বাদশ মিনিটে আলেকজান্দার সারলথের শট মিলিতাওয়র গায়ে লেগে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। পরের মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো স্বাগতিকরা। খুব কাছ থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি আইহেন মুনোস। চতুর্দশ মিনিটে দাভিদ সিলভার শট কোনোমতে ঠেকিয়ে রিয়ালের ত্রাতা থিবো কোর্তোয়া।

পরের মিনিটে বড় বাঁচা বেঁচে যায় সফরকারীরা। সারলথের ফ্লিকে বল পেয়ে খুব কাছ থেকেও জালের দেখা যাননি মার্তিন সুবিমেন্দি। তার শট ব্যর্থ হয় ক্রসবারে লেগে। ১৯তম মিনিটে ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন দাভিদ সিলভা। কিন্তু দারুণ দক্ষতায় তার শট ঠেকিয়ে দেন কোর্তোয়া। পাঁচ মিনিট পর টনি ক্রুসের দারুণ ফ্রি কিকে মিলিতাওয়ের হেড বেরিয়ে যায় দূরের পোস্ট ঘেঁষে। শুরুর গতি পরে ধরে রাখতে পারেনি কোনো দলই। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে আর তেমন একটা পরীক্ষায় পড়তে হয়নি দুই গোলরক্ষকের।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যায় সোসিয়েদাদ। সারলথের চ্যালেঞ্জের মুখে তালগোল পাকিয়ে ব্যকপাস দেওয়ার চেষ্টা করেন মিলিতাও। তবে শটে জোর ছিল বেশি, কোর্তোয়ার থেকে বেশ দূরেও ছিল। ছুটে গিয়েও নাগালে পাননি রিয়াল গোলরক্ষক। অনায়াসে বল জালে পাঠান তাকেফুসা কুবো। সাবেক দলের বিপক্ষে গোল করে শুরুতে উদযাাপন করেননি জাপানের এই উইঙ্গার। পরে অবশ্য তুমুল উদযাপনই করেন তিনি। ৬১তম মিনিটে বড় এক ধাক্কা খায় রিয়াল। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন দানি কারভাহাল।

প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়কে হলুদ কার্ড দেখাতে ৫৪তম মিনিটে প্রথম হলুদ কার্ড দেখেছিলেন তিনি। পরেরটি দেখেন বিপজ্জনক এক চ্যালেঞ্জের জন্য। ৮১তম মিনিটে একটুর জন্য দ্বিগুণ হয়নি ব্যবধান। ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে আন্দ্রে বারেনেটিয়ার ফ্রি কিক কোনোমতে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন কোর্তোয়া। চার মিনিট পর আর পারেননি তিনি। এবার ডি-বক্সের ভেতর থেকে কাছের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড বারেনেটিয়া।

আসন্ন কোপা দেল রে ফাইনাল ও ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগের কথা ভেবেই হয়তো প্রথম পছন্দের একাদশ খেলাতে পারেননি আনচেলত্তি। ভিনিসিউস-বেনজেমা-মদ্রিচদের অনুপস্থিতিতে রিয়ালের ফুটবল ছিল বিবর্ণ। দ্বিতীয়ার্ধে জয়ের তেমন অভিপ্রায় দেখাতে পারেনি তারা।