সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জ হাওরের ৯২ শতাংশ ধান কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষক। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অন্য বছরের চেয়ে এবার ধানের ফলন ভালো হওয়ায় খুশি হাওরের কৃষকরা।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলার ১৩৭ হাওরে দুই লাখ ২২ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাটা হয়েছে এক লাখ ৭০ হাজার হেক্টর জমির ধান।
চলতি মৌসুমে হাওরের ১০ লাখ কৃষক বোরো ধানের চাষাবাদ করেছেন। অন্য বছরের তুলনায় এবার ফলন ভালো হওয়ায় বৈশাখের প্রথম দিন থেকে ধান কাটা শুরু করেন কৃষকরা। কিন্তু আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী গত ২৩ এপ্রিল সকালে সুনামগঞ্জে কাল বৈশাখী ঝড়, বজ্রপাতে ছাতক, দোয়ারা বাজার ও তাহিরপুরসহ তিন উপজেলায় ধান কাটতে গিয়ে ছয় কৃষকের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করে। তবে ২৩ এপ্রিলের পর থেকে এখন পর্যন্ত সুনামগঞ্জ ঝড় বৃষ্টি না হওয়ায় সেই আতঙ্ক কেটে গেছে। এখন আনন্দের নিয়েই ধান কেটে ঘরে তুলছেন কৃষকরা।
মাটিয়ান হাওরের কৃষক তবির উদ্দিন বলেন, গত দুই বছরের তুলনায় এবার ফলন অনেক ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধান কেটে দ্রুত ঘরে তুলছি।
শনির হাওরের কৃষক মতিন মিয়া বলেন, গত দুই বছর ধরে ছেলে মেয়ে অনেক শখের কথা বলেছে, কিন্তু টাকার অভাবে পূরণ করতে পারিনি। এবছর ভালো ধান পেয়েছি। এবার পরিবারের সবার শখ পূরণ করবো।
দেখার হাওরের কৃষক সমির মিয়া বলেন, ধান ঘরে তুললে মনে একটা শান্তি লাগে। হেসে খেলে শান্তিতে বছরটা কাটাতে পারবো।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জে দুই লাখ ২২ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত এক লাখ ৭০ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। উৎপাদিত ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৫৩ হাজার মেট্রিক টন। যা থেকে ৯ লাখ ২ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হবে। এর বাজার মূল্য তিন হাজার ৮৮ কোটি টাকা।
সুনামগঞ্জ কৃষি কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র সোম বলেন, হাওরের ৯২ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। বর্তমানে বৃষ্টি আর নদীর পানি বাড়লেও কৃষকের খুব বেশি ক্ষতি হবে না। তবে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে আরও ৪-৫ দিন সময় লাগবে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।