স্টাফ রিপোর্টার : ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন-২০২৩-এর খসড়া উন্মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, এ খসড়া সংশোধিত আইনটি কোনও গোপন দলিল হতে পারে না। এটি মন্ত্রিপরিষদ কমিটিতে অনুমোদিত হয়েছে মর্মে গণমাধ্যমকে গত ২৮ মার্চ জানানো হয়। কিন্তু সেটা উন্মুক্ত না করার কারণে আইনের খসড়ায় ব্যাংক খাতের ব্যাপক আলোচিত চ্যালেঞ্জগুলো উত্তরণের কার্যকর উপায়সহ সার্বিকভাবে জনগণের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অমূলক নয়।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব মন্তব্য করে টিআইবি। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘প্রায় এক মাস আগে আইনটির খসড়া মন্ত্রিপরিষদ কমিটিতে যখন অনুমোদিত হয়, তখন আমাদের প্রত্যাশা ছিল যে বর্তমান সরকারেরই অনুসৃত চর্চা অনুযায়ী খসড়াটি সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত ও পরামর্শের জন্য প্রকাশিত হবে। কিন্তু খসড়াটি অদ্যাবধি জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা যায়, আইএমএফের সফররত মিশন খসড়াটি দেখতে চাইলে তা দেখাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গোপনীয়তা সুরক্ষার যুক্তিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে, যা আমাদের হতবাক করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যক্ষভাবে জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট এই আইনকে কোন যুক্তিতে গোপনীয় শ্রেণিভুক্ত করা হলো, তা যেমন বোধগম্য নয়; তেমনি এর ফলে এই সংশোধনের মাধ্যমে জনস্বার্থের তুলনায় কোনও বিশেষ মহলের দুরভিসন্ধির সুরক্ষাকেই আবারও প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে কি না, এ প্রশ্নের অবকাশ সৃষ্টি হয়েছে। গোপনীয় নয়, এমন একটি আইনের খসড়া প্রকাশে অনীহা ধোঁয়াশা সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে এ কারণে যে ব্যাংক খাতের নীতিকাঠামো ইতোমধ্যে ঋণখেলাপি, বিভিন্ন প্রকার জালিয়াতি ও অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী মহলের করায়ত্ত হয়েছে বলে জনমনে ব্যাপক উদ্বেগ বিরাজ করছে।’
‘তাই সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান, খসড়াটি অনতিবিলম্বে অতি জরুরি বিবেচনায় জনস্বার্থে প্রকাশ করুন এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত গ্রহণ করার পর্যাপ্ত সুযোগ সৃষ্টি করুন,’ বলেন তিনি।
ব্যাংক খাতে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ বিষয়ে টিআইবির গবেষণাপ্রসূত সুপারিশের সঙ্গে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধনের লক্ষ্যে গৃহীত এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে টিআইবি আশা করছে, সম্পূর্ণ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট খাতে অংশীজন, বিশেষ করে এ খাতের বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে তাদের মতামতের ভিত্তিতে খসড়াটি চূড়ান্ত করা হবে। তা না হলে ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের সদিচ্ছা প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যাবে বলে মনে করছে টিআইবি।