শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে, শনিবার ঈদ

Print Friendly, PDF & Email

বাংলাদেশের আকাশে হিজরি ১৪৪৪ সনের শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল শনিবার (২২ এপ্রিল) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। এ উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররম মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক শেষে এ সংবাদ জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি মো. ফরিদুল হক খান।

এর আগে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা করতে সন্ধ্যা ৬ টা ৪৫ মিনিটে (বাদ মাগরিব) বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক হয়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ও ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঢাকার হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ইদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়। রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সেই জামাতে অংশগ্রহণ করবেন। তবে আবহাওয়া প্রতিকূল হলে বা অন্য কোনও অনিবার্য কারণে এ জামাত অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে সকাল ৯টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে প্রতিবছরের মতো এবারও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ে পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে। আর এক ঘণ্টা পর পর ৮, ৯ ও ১০ টায় তিনটি জামাত এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে।

যেভাবে চাঁদ দেখা হয়

ধর্ম মন্ত্রণালয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে চাঁদ দেখার জন্য জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি রয়েছে। ১৮ সদস্যের এ কমিটি রাষ্ট্রপতি অনুমোদিত। এ কমিটির সভাপতি থাকেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী। সহ-সভাপতি হন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।

অন্য সদস্যদের পাশাপাশি কমিটিতে চারজন বিশিষ্ট আলেম থাকেন। সভায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব ও জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম এবং লালবাগ শাহি জামে মসজিদ ও চকবাজার শাহি জামে মসিজদের খতিব এ কমিটিতে থাকেন।

২৯ রমজান পত্রিকায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সেখানে ফোন নম্বর উল্লেখ করে কোথাও চাঁদ দেখা গেছে কি না, সেটি জানতে চাওয়া হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সারা দেশের জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষকেরা তথ্য দেন। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমেও তথ্য নেওয়া হয়। জেলা পর্যায়ের চাঁদ দেখা কমিটিগুলো নিজ নিজ জেলায় চাঁদ দেখার তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির কাছে তথ্য পাঠায়।

আবহাওয়া দপ্তরের থিওডোলাইট মেশিনের মাধ্যমেও সারাদেশে চাঁদ দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। আবার বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানও (স্পারসো) তথ্য দেয়। এছাড়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহায়তায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারাও ঢাকায় চাঁদ দেখার জন্য জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পার্শ্ববর্তী জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনের ছাদে থিওডোলাইট মেশিন স্থাপন করেন।

ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক দুজন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি অথবা একজন পুরুষ ও দুজন নারী চাঁদ দেখার বিষয়ে সাক্ষ্য দিলে তা গ্রহণযোগ্য হয়। এভাবে বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য পাওয়ার পর জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি পর্যালোচনা করে চাঁদ দেখার বিষয়টি নির্ধারণ করে এবং পবিত্র ঈদের ঘোষণা দেয়া হয়।