অর্থনৈতিক রিপোর্টার : তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে-৯৯.৭ শতাংশ কারখানায় ঈদুল ফিতরের উৎসব ভাতা প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান আগের বছরগুলোর ধারাবাহিকতা রক্ষা করে এ বছরেও পোশাক শিল্প খাতের উদ্যোক্তারা শ্রমিক ভাইবোনদের জন্য ঈদুল ফিতর আনন্দময় করতে পাওনাদি পরিশোধ করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখায় উদ্যোক্তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, নৌপরিবহনমন্ত্রী, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা, শ্রমিক নেতা এবং মিডিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, সবার ঐকান্তিক সহযোগিতায় এবারও শ্রমিক ভাইবোনেরা উৎসবমুখর পরিবেশে পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, ঈদের আগে বেতন ভাতার বিষয়ে সমস্যা হতে পারে-এরকম ৪৫০টি কারখানা ও প্রতিষ্ঠানকে ক্লোজ মনিটরিংয়ের আওতায় এনে বিজিএমইএ সমস্যার ধরন বুঝে সমাধানের উদ্যোগ নেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, বিজিএমইএ’র সরাসরি হস্তক্ষেপে সমস্যাপূর্ণ প্রায় ২৬টি কারখানার শ্রমিকদের বেতন ভাতা নিশ্চিত করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কারখানার সমস্যার ধরন বুঝে বিজিএমইএ’র উদ্যোগে শ্রমিক, মালিক, ফেডারেশন নেতাদের সঙ্গে যৌথ আলোচনাপূর্বক কারখানা বিক্রি করে, মেশিনপত্র বিক্রি করে অথবা ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে।
বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে বলা হয়, এবার আইনবহির্ভূত দুটি ইস্যুতে, এপ্রিল মাসের ১৫-২০ দিনের অগ্রিম বেতন এবং বাড়তি ছুটির দাবিতে কিছু কিছু কারখানায় ভাঙচুর হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সরকারের সিদ্ধান্ত ছিল ঈদের আগে শ্রমিক ভাইবোনদের মার্চ মাসের পূর্ণ বেতন ও উৎসব ভাতা প্রদান করার। কিন্তু শ্রমিকদের দাবি ছিল—এপ্রিল মাসের ১৫-২০ দিনের বেতন অগ্রিম দিতে হবে। শ্রম আইন অনুযায়ী, এপ্রিল মাসের বেতন পরবর্তী মাস অর্থাৎ মে মাসের ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদান করার কথা রয়েছে। শ্রমিক চাইলে, মালিকের সক্ষমতা থাকলে অগ্রিম বেতন দেওয়া যেতে পারে। তবে এ বিষয়ে কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ১৭৬৮টি কারখানা (৮২.১৯%) এপ্রিল মাসের অগ্রিম বেতন প্রদান করেছে।
এবারে প্রচলিত ধারার বাইরে বাড়তি ছুটির (১১/১২ দিন ছুটি) দাবিতে কারখানা ভাঙচুর হয়েছে। তথাকথিত শ্রমিক নেতা নামধারী ব্যক্তিদের ইন্ধন, গুজব রটানোর মাধ্যমে কারখানা ভাঙচুর করা হয়েছে। যাহোক, সবার সহযোগিতায় শেষ পর্যন্ত সমস্যাগুলোর সুষ্ঠু সমাধান হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চালু কারখানার সংখ্যা ঢাকায় ১৮৯৪টি এবং চট্টগ্রামে ২৫৭টি, সর্বমোট ২১৫১টি। মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে শতভাগ কারখানায়।
ঈদুল ফিতরের উৎসব ভাতা প্রদান করা হয়েছে ২১৪৫টি অর্থাৎ ৯৯.৭২ শতাংশ কারখানায়। অবশিষ্ট ৬টি কারখানার উৎসব ভাতা আজকের মধ্যে প্রদানের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আজকের মধ্যে শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ নিশ্চিত করা হয়েছে।
সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিজিএমইএ’র অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে পোশাক কারখানাগুলো ১৬ এপ্রিল থেকে পর্যায়ক্রমে বৃহস্পতিবারের মধ্যে শ্রমিক ভাইবোনদের ছুটি প্রদান করছে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান ঈদে বাড়ি ফেরা নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাস, ট্রেন ও লঞ্চগুলো যাতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন না করে, সে ব্যাপারে নজরদারি জোরদার এবং পণ্যবাহী ট্রাকে যাতে যাত্রী পরিবহন করা না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন।