১৪৮ দিনে বাম্পার ফলন, হেক্টরে ৮ মেট্টিক টন ধান

Print Friendly, PDF & Email

জেলা প্রতিনিধি : মাত্র ১৪৮ দিনের মধ্যে জিংক সমৃদ্ধ ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় খুশি কৃষক। প্রথমবারের মতো বাম্পার ফলন হওয়ায় অন্যান্য কৃষকের মাঝে আগামীতে এই ধান চাষাবাদে আগ্রহ বেড়েছে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে চলতি বোরো মৌসুমে বরিশালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের পরামর্শে প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু-১০০ ধান চাষ করে ব্যাম্পার ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। প্রতি হেক্টর জমিতে ধান চাষাবাদে খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। আর এতে উৎপাদন হয়েছে প্রতি হেক্টরে সাড়ে ৭ থেকে ৮ মেট্টিক টন ধান। যার বাজার মূল্য এক লাখ টাকারও অধিক।

গৌরনদী উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দীপঙ্কর বাড়ৈ বলেন, বঙ্গবন্ধু-১০০ ধানে জিংক থাকায় ও প্রথম বছরেই অধিক ফলন হওয়ায় কৃষকদের মাঝে এ ধান চাষাবাদে আগ্রহ বেড়েছে। তাই সর্বত্র এ ধানের বীজ ছড়িয়ে দিতে কৃষি বিভাগ থেকে কাজ শুরু করা হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে এ ধান চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে বিনামূল্যে সার, বীজ, কীটনাশকসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু-১০০ ধানের প্রতিকেজিতে ২৫.৭ মিলিগ্রাম জিংক রয়েছে। এ ধানের জীবনকাল ১৪৮ দিন। পাশাপাশি অতিসম্প্রতি ঘূর্নিঝড় অশনি’র প্রভাবে এ ধান গাছের তেমন কোন ক্ষতি না হওয়ায় উপজেলার অন্যান্য চাষীদের মধ্যে আগামী বোরো মৌসুমে বঙ্গবন্ধু-১০০ ধান চাষে ব্যাপক আগ্রহ বেড়েছে। উপজেলায় প্রথমবারের মতো এ ধান চাষাবাদ হওয়ায় সার্বক্ষনিক কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মাঠে থেকে কৃষকদের চাষাবাদে ও রক্ষণাবেক্ষনে পরামর্শ দেয়ার কারণেই প্রথম বছরে বঙ্গবন্ধু-১০০ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।

উপজেলার বার্থী এলাকার চাষী আব্দুল হালিম বলেন, প্রথমবছরেই বঙ্গবন্ধু-১০০ ধান চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছি। তাই আগামীতে অন্যান্য জমিতেও এ ধান চাষ করা হবে। খাঞ্জাপুর এলাকার চাষী এমদাদ হোসেন বলেন, এক হেক্টর জমিতে বঙ্গবন্ধু-১০০ ধান চাষাবাদে আমার ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর এতে উৎপাদন হয়েছে প্রায় আট মেট্টিক টন ধান। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু-১০০ ধান চাষাবাদে বাম্পার ফলন হওয়ায় গ্রামের অন্যান্য কৃষকরা আগামী বোরো মৌসুমে তাদের জমিতে এ ধানের চাষ করার জন্য তার কাছ থেকে বীজ ধান ক্রয় করে নিচ্ছেন। এ ধানে কোন রোগের আক্রমণ হয়নি। ক্ষেত হয়েছে সব জায়গায় সমান। তাই আগামী বোরো মৌসুমে এ ধানের চাষাবাদ সম্প্রসারিত করার জন্য কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে জমির সব ধান বীজ হিসেবে রেখেছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মোঃ মামুনুর রহমান বলেন, উপজেলার বার্থী ও খাঞ্জাপুর ইউনিয়নে শতাধিক কৃষক প্রথমবারের মতো উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে বঙ্গবন্ধু-১০০ ধান চাষ করেছেন। প্রথমবছরেই তারা বাম্পার ফলন পেয়েছেন। ফলে আগামী মৌসুমে উপজেলার অন্যান্য কৃষকদের মাঝে এ ধান চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, জিংক সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধু-১০০ ধানটি ব্রি-ধান ৭৪ এর কাছাকাছি। নতুন জাতের বঙ্গবন্ধু-১০০ ধানে রোগ বালাইয়ের আক্রমণ নেই। তাই ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষকরা।

জিংক ও আয়োডিন সমৃদ্ধ প্রিমিয়াম কোয়ালিটির এ ধান কৃষক মহলে জনপ্রিয় হওয়ার দাবি করে কৃষিবিদ মামুনুর রহমান আরও বলেন, আগামী মৌসুমে বঙ্গবন্ধু-১০০ ধান আরও সম্প্রসারিত হবে। মাঝারি ও চিকন হওয়ায় এ জাতের ধানের চাল বাজারে প্রভাব ফেলবে। রোগ ও পোকামাকড় সহনশীল হওয়ায় এ ধানে উৎপাদন খরচ কম। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতের এ চালের ভাত খেতে সুস্বাদু ও জিংক সমৃদ্ধ হওয়ায় মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।