শতভাগ যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু

Print Friendly, PDF & Email

নিউজ ডেস্ক : করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ১৯ দিন বন্ধ থাকার পর শুরু হয়েছে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল৷

বুধবার (১১ আগস্ট) ভোর পৌনে ৫টায় রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশে ছেড়ে যায় বলাকা কমিউটার ট্রেন। এর পর ভোর ৫টায় তুরাগ লোকাল এবং ৫টা ৪০ মিনিটে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ বাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যায় দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেন।

এ বিষয়ে কমলাপুর রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার রফিকুল ইসলাম গনমাধ্যমে বলেন, করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে শতভাগ যাত্রী নিয়ে সীমিত পরিসরে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ঢাকা থেকে ২৫ জোড়া আন্তঃনগর এবং ১২ জোড়া মেইল-কমিউটার ট্রেন চলাচল করছে। আর সারাদেশ থেকে ৩৮ জোড়া আন্তঃনগর এবং ২০ জোড়া মেইল-কমিউটার ট্রেন চলাচল করছে৷

আমরা শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন পরিচালনা করবো। ইতোমধ্যেই স্টেশন ধোয়া-মোছার কাজ শেষ হয়েছে। সে সঙ্গে জীবাণুনাশক দিয়ে ট্রেনের ভেতরে এবং বাইরে পরিষ্কার করা হয়েছে।

কমলাপুর রেল স্টেশন সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১১ আগস্ট) ভোর পৌনে ৫টায় ময়মনসিংহের উদ্দেশে বলাকা কমিউটার ট্রেন ছেড়ে যায়। এর পর ৫টায় তুরাগ লোকাল, ৫টা ৪০ মিনিটে দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ছেড়ে যায়। প্রথম আন্তঃনগর ট্রেন হিসেবে সকাল ৬টা ২০ মিনিটে সিলেটের উদ্দেশে পারাবত এক্সপ্রেস ছেড়ে যায়৷

৩৮ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন এবং ২০ জোড়া মেইল-কমিউটার ট্রেন চলাচল করবে।

যেসব আন্তঃনগর ট্রেন চলছে: সুবর্ণ এক্সপ্রেস, মহানগর গোধূলি তূর্ণা, মহানগর প্রভাতী/তূর্ণা, তিস্তা এক্সপ্রেস, যমুনা এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, উপকুল এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা/উপবন এক্সপ্রেস, মেঘনা এক্সপ্রেস, অগ্নিবীনা এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা/উপবন এক্সপ্রেস, পাহাড়িকা/উদয়ন এক্সপ্রেস, সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, বিজয় এক্সপ্রেস, পাহাড়িকা/উদয়ন এক্সপ্রেস, হাওর এক্সপ্রেস, একতা এক্সপ্রেস, দ্রুতযান এক্সপ্রেস, বনলতা এক্সপ্রেস, পদ্মা এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চিত্রা এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস, নীলসাগর এক্সপ্রেস, রূপসা এক্সপ্রেস, মধুমতি এক্সপ্রেস, তিতুমির এক্সপ্রেস, সাগরদাড়ী এক্সপ্রেস, ঢালারচর এক্সপ্রেস, টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস, সীমান্ত এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস এবং পঞ্চগড় এক্সপ্রেস৷

যেসব মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চলছে- ঢাকা/চট্টগ্রাম, কর্ণফুলী কমিউটার, সাগরিকা কমিউটার, বলাকা কমিউটার, জামালপুর কমিউটার, সুরমা মেইল, তিতাস কমিউটার, দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার, ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস, মহুয়া কমিউটার, ঢাকা কমিউটার, রকেট মেইল, মহানন্দা এক্সপ্রেস, পদ্মরাগ কমিউটার, উত্তরা এক্সপ্রেস, রাজবাড়ী এক্সপ্রেস, বিরল কমিউটার, বগুড়া কমিউটার এবং কলেজ ট্রেন৷

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার শরিফুল আলম জানান, ১১ আগস্ট থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও ওইদিন একতা এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস, নীলসাগর এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনসমূহ ঢাকা থেকে এবং ৭৮৩ টংগীপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি গোবরা থেকে ছাড়ছে না।

বাংলাদেশ রেলওয়ের যাত্রীদের জন্য বিশেষ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে৷ যার মধ্যে রয়েছে- কোনো প্রকার ভাড়া বৃদ্ধি করা হবে না। সব অগ্রীম টিকিট যাত্রার ৫ (পাঁচ) দিন আগে ক্রয় করতে পারবেন। অনলাইনে ক্রয়কৃত টিকিট ফেরত দেওয়া যাবে না। কমিউটার ট্রেনের টিকিট যথারীতি নির্দিষ্ট বক্স কাউন্টার থেকে দেওয়া হবে। আসনবিহীন টিকিট বিক্রয় বন্ধ থাকবে। ট্রেনে ভ্রমণ ইচ্ছুক যাত্রীদের নিজ নিজ টিকিট নিশ্চিত করেই কেবল ট্রেনে ভ্রমণের জন্য অনুরোধ করা হলো। টিকিটবিহীন কোনো যাত্রী স্টেশনে প্রবেশ বা ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন না। মাস্ক ব্যতীত কোনো যাত্রীতে স্টেশনে প্রবেশ বা ট্রেনে ভ্রমণ করতে দেওয়া হবে না।

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরুতে গত বছরের ২৫ মার্চ প্রথম যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় সরকার। দুই মাসের বেশি সময় পর গত বছরের ৩১ মে আট জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হয়। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে চলতি বছরের ৫ এপ্রিল থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়। ৭ সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর ২৪ মে থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়৷ এর পর আবারও ২৩ জুন থেকে বন্ধ ছিলো ট্রেন চলাচল৷ পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে৷ পরে ২৩ জুলাই থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়৷