নিউজ ডেস্ক : ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট, তিস্তা ও করতোয়াসহ সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। করতোয়া নদীর পানি কাটাখালী পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে ১১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর ও ঘাঘট নদীর পানি ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে গাইবান্ধা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। আর তিস্তা, বাঙালি ও যমুনা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে।
শুক্রবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলা প্রশাসন এখনও পানিবন্দি মানুষের তথ্য না জানালেও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা জেলার সদরে ৫টি গ্রাম, সুন্দরগঞ্জে ১৫টি, ফুলছড়িতে ১৫টি ও সাঘাটায় ২০টি, পলাশবাড়ীতে ১৫টি গোবিন্দগঞ্জে ২৫টি গ্রামসহ মোট ৮০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। চলতি বছরের পর পর চার দফা বন্যার ধকল কাটাতে না কাটাতেই পঞ্চম দফা বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ ফের পানিবান্দি হয়ে পড়েছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা। পানি বৃদ্ধির ফলে গোবিন্দগঞ্জ-ঘোড়াঘাট-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক তলিয়ে গেছে। পৌরসভার হাজার হাজার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে।
গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার বাসিন্দা কলিম উদ্দিন বলেন, আমরা অনেক কষ্টে আছি। গত ২০ বছরে করতোয়া নদীতে এতো স্রোত দেখিনি। তীব্র স্রোতে নদীর আশপাশে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
পলাশবাড়ী উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের মাহমুদ আলী জানান, বন্যার পানিতে বসতবাড়ি তলিয়ে গেছে। অনেক কষ্টে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছি। কেউ খোঁজ নিতে আসে না।
পলাশবাড়ী উপজেলার তেনাকী গ্রামের কাশেম উদ্দিন জানান, বাঁধ ভেঙে গত সপ্তাহে উপজেলার ১৫টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যায় আমন ধানের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বলেন, বন্যায় এ উপজেলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যাকবলিত ও ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে আমরা ত্রাণ বিতরণ করছি। সরকারিভাবে আরও ত্রাণের প্রয়োজন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা একেএম ইদ্রিস আলী বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী মজুত আছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। বন্যাকবলিত ও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে ত্রাণ বিতরণ অব্যহত আছে।