নিউজ ডেস্ক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যেকে ‘রাজনৈতিক মিথ্যাচার ও মনগড়া বক্তব্য’ আখ্যায়িত করে বলেছেন, আন্তর্জাতিক রায়ের মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের কুটনৈতিক সফলতা যখন দৃশ্যমান, তখন বিএনপি মহাসচিবের এ ধরণের বক্তব্য দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত। তাদের কথা শুনে মনে হয়েছে, বিএনপি রোহিঙ্গা সঙ্কটের কোন প্রকার সমাধান চায় না।
শুক্রবার রাতে এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিবের সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কূটনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত ও দূরভিসন্ধিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পুনরায় বিএনপি’র রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের প্রমাণ দিয়েছেন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম সত্যকে আড়াল করে মনগড়া বক্তব্য জাতির সামনে উপস্থাপন করেছেন। বিএনপি মহাসচিবের মিথ্যাচারপূর্ণ বক্তব্যে জাতি হতাশ হয়েছে। জাতি জানতে চায়, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে বিএনপি কী কী ভূমিকা রেখেছে? নিজেদের দুর্নীতিবাজ নেতাদের রক্ষার চেষ্টা ছাড়া আন্তর্জাতিক পরিম-লে দেশের স্বার্থরক্ষা ও মর্যাদা বৃদ্ধিতে তাদের ভূমিকা কী?
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সরকারের মানবিক উদ্যোগ এবং কূটনৈতিক তৎপরতা জাতিসংঘসহ বিশ^ব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। এই সমস্যার সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর কূটনৈতিক দক্ষতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বকে স্বাগত জানিয়ে বিশ^ গণমাধ্যম জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ অভিধায় ভূষিত করেছে। একই সঙ্গে বিশে^র বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশ সফর করে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার পদক্ষেপের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সফলতা যখন দৃশ্যমান তখন বিএনপি মহাসচিবের এই ধরনের বক্তব্য দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রেরই ইঙ্গিত দেয়। রোহিঙ্গা ইস্যুর শুরু থেকেই বিএনপি মিথ্যা-বিভ্রান্তকর ও ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য দিয়ে আসছে। জাতি জানে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের অবৈধ ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে বিএনপি যতবার ক্ষমতায় এসেছে তাদের সময় বাংলাদেশে ‘দুর্নীতি ও নতজানু পররাষ্ট্র নীতি’ ছাড়া স্বরাষ্ট্র বা পররাষ্ট্রনীতি বলতে আদৌ কিছু ছিল না। অবশ্য, যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে তাদের কাছে রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক শিষ্ঠাচার আশা করা যায় না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সফলতার সঙ্গে সরকার পরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন এবং বিশ^সভায় বাংলাদেশকে একটি আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরীতা নয়’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া পররাষ্ট্রনীতির আলোকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালিত হচ্ছে। যার কারণে বাংলাদেশ আজ অপরাপর রাষ্ট্রের সঙ্গে সুদৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই আন্তর্জাতিক পরিম-লে বাংলাদেশের সকল প্রকার স্বার্থ অক্ষুণœ ও পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান খোঁজার জন্য দ্বিপাক্ষিক-ত্রিপাক্ষিকসহ বহুপাক্ষিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জোর দাবী তোলা হয়েছে এবং তা কার্যকর রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতার কারণেই বিশে^র বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক আদালতের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের উপর ব্যাপক চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের কূটনৈতিক সফলতার কারণেই করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উস্কানিমূলক ও দূরভিসন্ধিমূলক, অসত্য বক্তব্য রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করবে এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে বিনষ্ট করবে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা আজ বিশে^র নন্দিত নেত্রী। বিশে^র বিভিন্ন সংস্থা ও বিশ^খ্যাত সাময়িকী করোনাকালে জননেত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আজ বিশ^ নেতাদের শ্রদ্ধার পাত্র। তাই তাঁর ৭৪তম শুভ জন্মদিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিশে^র বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ উষ্ণ শুভেচ্ছা-অভিনন্দন পাঠান। অপরদিকে দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার ভূয়া জন্মদিনে চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানিয়েও তা প্রত্যাখান করা হয়। বিএনপির রাজনীতি খালেদা জিয়ার ভূয়া জন্মদিনের মতোই মিথ্যা, আর ষড়যন্ত্রে ভরপুর।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্বপরিমণ্ডলে বাংলাদেশ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মর্যাদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে বন্ধু রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে সুসম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যমান সুসম্পর্কই বিএনপির গাত্রদাহের কারণ। কূটনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত ও দূরভিসন্ধিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পুনরায় বিএনপি’র রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের প্রমাণ দিয়েছেন।