নিউজ ডেস্ক : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, সাশ্রয়ী মূল্যে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সরবরাহ ও কিস্তিতে ডিজিটাল ডিভাইস দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে সরকার।
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে যে পদক্ষেপসমূহ নেওয়া দরকার তার প্রতিটিতে আমরা পাশে থাকবো।
সোমবার (৩১ আগস্ট) অনলাইনে সিলেটে জালালাবাদ কলেজের স্মার্ট ক্যাম্পাস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মোস্তাফা জব্বার ডিজিটাল কনটেন্ট উন্নয়নে গত ১১ বছরে তার ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা তুলে ধরে বলেন, করোনাকালে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যাহত না হয় সেজন্য প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইনে বিনামূল্যে কনটেন্ট দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল যুগের পেশার জন্য ডিজিটাল শিক্ষা দরকার। এ জন্য যা যা করার তা করতেই হবে।
মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য প্রচলিত কাগজের বইসমূহের ডিজিটাল কনটেন্টে রূপান্তর ও শিক্ষকদের ডিজিটাল যোগ্যতা অর্জন অপরিহার্য। ডিজিটাল দুনিয়ায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, ইন্টারনেট হচ্ছে জ্ঞান ভাণ্ডার। আজকের পৃথিবীতে ইন্টারনেট শ্বাস-প্রশ্বাসের মতোই অপরিহার্য। কাজেই ছেলে-মেয়েদের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দিতে হবে এবং তাকে নিরাপদও রাখতে হবে। এটাই হচ্ছে ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের বাস্তবতা।
মন্ত্রী বলেন, আজকের শিক্ষার্থীরাই বাংলাদেশের ভবিষ্যত। দেশের মোট জনগোষ্ঠীর শতকরা ৬৫ শতাংশের বয়স ৩৫ বছরের নিচে এবং তারা খুবই মেধাবী। আমার সন্তান আমার ভবিষ্যত এ মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে তাদের সম্পদে পরিণত করতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের যথেষ্ট যত্নবান হতে হবে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আলোকিত এক বাংলাদেশ আমি দেখতে পাচ্ছি। নব্বইয়ের দশকে তিনি গাজীপুরে প্রথম ডিজিটাল স্কুল প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে যে যাত্রাটি শুরু করেছিলেন, করোনাকালে সেটি আজ সার্বজনীন বাস্তবতায় রূপ নিয়েছে। করোনা পরবর্তী পৃথিবী করোনার আগের সময়ে ফেরানো যাবে না।
বাংলাদেশে কম্পিউটার বিপ্লবের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার সাধারণের নাগালে কম্পিউটার পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন, ১৯৯৬ সালের আগে কম্পিউটার সাধারণের কাছে একটি উচ্চদামের অভিজাত যন্ত্র হিসেবে পরিচিত ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কম্পিউটারের ওপর থেকে ১৯৯৮ সালে ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার করে কম্পিউটারকে সাধারণের নাগালে পৌঁছে দেন। ভিস্যাটের মাধ্যমে তিনি অনলাইন পদ্ধতিতে ইন্টারনেট চালু এবং মোবাইলের মনোপলি ব্যবসা ভেঙে দিয়ে সাধারণের জন্য মোবাইল সহজলভ্য করে ডিজিটাল বিপ্লবের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে পৃথিবীতে প্রথম ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ইংল্যান্ড ২০০৯ সালে, ভারত ২০১৪ সালে, মালদ্বীপ ২০১৫ সালে ও পাকিস্তান ২০১৯ সালে অনুরূপ কর্মসূচি ঘোষণা করে। ডিজিটাল কর্মসূচি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় গত ১১ বছরে বাংলাদেশ এক অনন্য উচ্চতায় উপনীত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি এক এম বদরুদ্দোজা, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি শহিদুল মনির, সমিতির সিলেট জোনের চেয়ারম্যান এনামুল কুদ্দুস চৌধুরী, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. নজরুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক চৌধুরী মোকাম্মেল ওয়াহেদ, শিক্ষার্থী মরিয়ম আক্তার প্রমুখ বক্তব্য দেন।