নিউজ ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমেদের মরদেহে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিএনপি। শুক্রবার সকালে রাজধানীর কাঁটাবনের এলিফ্যান্ট রোডে নিজ বাসায় তার মরদেহে দলের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি কিছুক্ষণ তার মরদেহের সামনে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
পরে গণমাধ্যমের সামনে ফখরুল বলেন, তিনি এভাবে হঠাৎ করে চলে যাবেন এটা আমরা কেউ বিশ্বাস করতে পারছি না। কারণ কয়েকদিন আগে আমরা তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি অনলাইনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীর আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন। তার এই চলে যাওয়া আমাদের জন্য একটি বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি করলো। তার এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। পরম করুণাময় আল্লাহ তাআলা তাকে যেন বেহেশতবাসী করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রফেসর এমাজউদ্দীন বাংলাদেশের অভিভাবক ছিলেন। স্বাধীনতাকামী, গণতন্ত্রকামী মানুষের অভিভাবক ছিলেন। তিনি সত্যিকার অর্থেই একজন নিবেদিত প্রাণ দেশপ্রেমিক ও শিক্ষাবিদ ছিলেন। চরম দুর্ভাগ্য যে, এরকম একজন অভিভাবককে শুধু বিএনপি নয়, গোটা জাতি হারাল। তিনি সবসময় চেয়েছেন বাংলাদেশে একটা সত্যিকার অর্থে একটা উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মিত হোক, বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে একটা উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হোক, জনগণের মুক্তি হোক। তিনি সারাজীবন ধরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্রের জন্য তার লেখনী অব্যাহত রেখেছেন। এমাজউদ্দীনের জীবনের সমস্ত কর্ম ছিল এই দেশের জন্য।
তিনি বলেন, অধ্যাপক এমাজউদ্দীন সূর্য ছিলেন। সেই সূর্যের আলোয় আমরা সবাই আলোকিত হতাম। তার অসংখ্য লেখা রয়েছে। তার লেখাগুলো রাষ্ট্র বিজ্ঞানের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখা। সবশেষ কিছুদিন আগে তিনি আবদুল হাই শিকদারসহ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ওপর একটি বই প্রকাশ করেছেন।
এর আগে বিএনপি মহাসচিব এলিফ্যান্ট রোডের বাসায় গিয়ে এমাজউদ্দীনের ছেলে জিয়া হাসান ইবনে আহমদের সাথে কথা বলেন এবং পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সদরুল আমিন, কবি আবদুল হাই শিকদার, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, সাবেক ছাত্র নেতা সুরঞ্জন ঘোষসহ বিশ্ববদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
এমাজউদ্দীনের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সকালে বাসায় ছুটে যান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইকবালুর রহমান রোকন, সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ বিএনপি নেতারা। তারা এমাজউদ্দীনের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ পৃথক শোকবার্তায় অধ্যাপক এমাজউদ্দীনের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোক প্রকাশ করেছেন।