নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে স্বজন হারানো ও ক্ষতিগ্রস্ত ৩১ পরিবারকে সহায়তা দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নগর ভবনে এক অনুষ্ঠানে এসব পরিবারকে সহায়তা দেন মেয়র সাঈদ খোকন।
সহায়তার অংশ হিসেবে ৩১ পরিবারের ২১ জনকে সিটি করপোরেশনে পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে (মাস্টার রোল) নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। চার জনকে দুই লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। দুই জনকে একটি দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উচ্চ শিক্ষিত চার জনকে যোগ্যতা অনুসারে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে চাকরি দেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।
সাঈদ খোকন বলেন, দুর্ঘটনার পর আমরা ৩১টি পরিবার থেকে আবেদন পেয়েছিলাম। তাদের ভেতর থেকে ২১ জনকে চাকরি দিচ্ছি। অনেকে আছেন যারা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল, তারা চাকরি করতে চাননি। এমন দু’জনকে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চারজনের প্রত্যেককে দুই লাখ করে টাকা দিয়েছি। উচ্চশিক্ষিত আরও চারজনকে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগপত্র দেওয়া হবে।
বিগত এক বছরে কেন এ সহায়তা দেওয়া হয়নি ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সিটি করপোরেশন কেন উদাসীন ছিল স্থানীয়দের এমন অভিযোগ সম্পর্কে সাঈদ খোকন বলেন, আপনারা জানেন, আমি চাইলেই একজনকে সরকারি চাকরি দিতে পারি না। যদিও সবাইকেই সিটি করপোরেশনে চাকরি দেওয়া হয়েছে। তবে এ চাকরি দিতেও আমাকে অনেক জায়গা থেকে অনুমতি নিতে হয়েছে। আর অগ্নিকাণ্ডের পর আমাদের অভিযান ও মনিটরিং শেষে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েই আমরা সেখান থেকে এসেছি। এরপরেও যারা আমাদের কাছে সাহায্যের জন্য এসেছেন, আমরা আমাদের সাধ্যমতো করেছি। আগামীতেও কেউ এলে করবো।
রাসায়নিক গুদামের কারণে সৃষ্ট ওই অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতার কথা তুলে খোকন বলেন, চাইলেই পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদামগুলো বন্ধ করে দেওয়া যায় না। ঢাকার বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ হয় এখান থেকে। ঘটনার পরপর এগুলো বন্ধ করে দিলে তার নেতিবাচক প্রভাবও পড়বে। কিন্তু জীবনের আগে তো ব্যবসা নয়। জীবন আর জীবিকার সংগ্রামের সমন্বয় করতে আমরা চেষ্টা করছি।
রাসায়নিক এসব গোডাউন সরাতে শিল্প মন্ত্রণালয়ও কাজ করছে উল্লেলহ করে সাঈদ খোকন বলেন, গোডাউনগুলো স্থানান্তরের জন্য ইতোমধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তারা কাজ করছে। আমরা নিরাপদ ঢাকা শহর গড়ে তুলবো।
ট্রাজেডিঘন সেই রাতের স্মৃতিচারণ করে মেয়র খোকন বলেন, এই এক বছর কেটেছে অত্যন্ত বেদনাদায়ক স্মৃতি নিয়ে। সেই রাতে অগ্নিকাণ্ডের খবর জানার পর সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। অনেকেই ঘুমিয়ে পড়েছিল, ফোন দিয়ে দিয়ে সবাইকে ওঠানো হয়েছে। নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের জীবন বাঁচাতে কাজ করেছি। সারারাত কেউ দুই চোখের পাতা এক করতে পারিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুন লেগে ৭১ জন প্রাণ হারান। আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওই এলাকার কেমিক্যাল গোডাউনসহ বহু স্থাপনা।