বিশেষ আদালতে হবে মাদক মামলার বিচার

Print Friendly, PDF & Email

নিউজ ডেস্ক : মাদকদ্রব্য মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ‘বিশেষ আদালত’ গঠিত হবে। মাদক মামলার বিচারে ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা থাকলেও সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সব জেলা ও মহানগরে বিশেষ আদালত গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফলে আদালতে বছরের পর বছর ঝুলে থাকা মাদক মামলার সংখ্যা কমে আসবে। কোনো মামলার রায়ের পর হাইকোর্ট বা উচ্চ আদালতে দৌড়ঝাঁপ করতে হবে না।

সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) আইন, ২০২০’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

আজ মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে সচিবালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) শেখ মুজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, অবৈধ মাদক ব্যবসায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতেও নতুনভাবে সৃষ্ট মাদকের আগ্রাসন রোধ কল্পে ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদে পাস হয়। পরে একই বছরের ১৪ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির সদয় সম্মতি লাভ করে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এর ৪৪ ধারা অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের কথা বলা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রয়োজনীয়সংখ্যক মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করিতে পারিবে। রাইডার উপধারা ১ এর অধীন একাধিক ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করা হলে, ট্রাইব্যুনাল গঠনকারী প্রজ্ঞাপনে প্রতিটি ট্রাইব্যুনালের উক্ত এলাকা নির্দিষ্ট করিতে পারিবে। প্রতিটি ট্রাইব্যুনালে অতিরিক্ত জেলা জজ পদমর্যাদার অফিসারদের মধ্য হইতে বিচারক নিযুক্ত হইবেন তবে শর্ত থাকে যে কোন জেলায় অতিরিক্ত জেলা জজ না থাকলে ওই জেলা দায়রা জজ তাহার নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে দায়িত্ব পালন করবেন। এ ধারার অধীন ট্রাইব্যুনাল স্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা সংশ্লিষ্ট জেলার অতিরিক্ত জেলা জজ দায়রা জজকে তাহার নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করতে পারবে। সরকার যে স্থানসমূহ নির্ধারণ করবে সেই স্থান বা স্থানসমূহের যেকোনো স্থানে ট্রাইব্যুনাল বুঝিতে পারিবে এবং কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। এ ধারার অধীন ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সরকার সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ গ্রহণ করবে।

কিন্তু প্রশাসনিক কারণে বিচার ও আইন বিভাগ থেকে অদ্যাবধি মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপন বা অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজকে তার দায়িত্বের অতিরিক্ত ট্রাইব্যুনালের দায়িত্ব প্রদান করা সম্ভব হয়নি।

ফলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ কার্যকরী হওয়ার পর এ আইনে দায়েরকৃত মামলাসমূহ বিচারের মাধ্যমে নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হয় এবং পেন্ডিং মামলার সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকে। এমতাবস্থায় এ আইনের আওতায় দ্রুত বিচার কার্য শুরুর লক্ষ্যে ৪৪ ধারার ট্রাইব্যুনালের পরিবর্তে একটি অসম্পূর্ণ আদালত গঠনের মাধ্যমে আইনটি সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়, যা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) আইন, ২০২০ নামে অভিহিত হবে।

শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, সংশোধন করা হলে এ আইনের অধীন মাদকদ্রব্য অপরাধগুলো অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী এখতিয়ারসম্পন্ন আদালতে বিচার হবে। সংশ্লিষ্ট দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ তাদের এখতিয়ার সম্পন্ন এলাকার জন্য কেবল মাদকদ্রব্য অপরাধের বিচারের জন্য এক বা একাধিক আদালত নির্দিষ্ট করতে পারবেন। ফলে মাদক অপরাধের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।