মা কোলে নিতেই নড়ে উঠলো মৃত বলে ফেলে রাখা নবজাতক!

Print Friendly, PDF & Email

নিউজ ডেস্ক : চুয়াডাঙ্গা শহরের হাসপাতাল সড়কের ‘উপশম নার্সিং হোম’-এ নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে প্রসূতি জিনিয়া খাতুনের কোলজুড়ে জন্ম নেয় একটি কন্যা শিশু। কিন্তু শিশুটি জন্ম নিলেও বাবা-মায়ের মুখে পড়ে হতাশার ছাপ। কারণ সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করে ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।

মৃত ভেবে কিছুক্ষণ পর শিশুটিকে যখন প্যাকেটে ভরার প্রস্তুতি চলছিল ঠিক তখনই শিশুটি নড়ে উঠে। এরপর তড়িঘড়ি করে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নবজাতকটিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

সোমবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হলে শহরজুড়ে শুরু হয় চাঞ্চল্য।

শিশুটির স্বজন ও স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, নবজাতককে মৃত ভেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেঝের ওপর দীর্ঘ সময় ফেলে রাখে। মৃত ভেবে নবজাতকটি বাড়িতে নেওয়ার আগে মা সন্তানকে কোলে তুলে নেয়। এ সময় শিশুটি নড়ে উঠে। সঙ্গে সঙ্গে জান্নাতুলের স্বজনরা চিকিৎসক ডেকে নিয়ে আসেন। ডাক্তার এসে শিশু জান্নাতুলকে স্থানান্তর করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। সেখানে সুস্থ হয়ে উঠেছে জান্নাতুল। হাত-পা নেড়ে খেলছে। পিটপিট করে তাকাচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাজরাহাটি গ্রামের মুদি দোকানি আবদুল হালিম ও জিনিয়া খাতুনের বিয়ে হয় বেশ কয়েক বছর আগে। জিনিয়ার গর্ভে সন্তান আসার পর তাকে নিয়মিত চেকআপ করতেন জেলা শহরের উপশম নার্সিং হোমের স্বত্ত্বাধিকারী ডা. জিন্নাতুল আরা।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকালে জিনিয়ার পেটে ব্যথা শুরু হলে তাকে নেয়া হয় ডা. জিন্নাতুল আরার কাছে। সেখানে তার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন জিনিয়া। ভোর ৪টার দিকে কন্যাসন্তান প্রসব করেন জিনিয়া খাতুন।

জিনিয়া খাতুন বলেন, ভোরে আমাকে বলা হলো বাচ্চা মারা গেছে। এরপর আমরা পরিবারের অন্যান্যকে জানাই। দাফন কাফনের জন্যও প্রস্তুতি নিতে থাকে স্বামী ও স্বজনরা। এরই মধ্যে শিশুটিকে অযত্ন অবহেলায় মেঝের ওপর রেখে দেয়া হয়।

তিনি বলেন, মৃত বলে তাকে একটি পলিথিন এনে মুড়িয়ে ফেলা হচ্ছিল। এ সময় আমি কাঁদতে কাঁদতে মেয়েকে একবার শেষবারের মতো কোলে নিয়ে দেখতে চাই। কোলে নিতেই আমার মেয়ে নড়ে ওঠে। এ সময় পুনরায় ডা. জিন্নাতুল আরাকে ডাকা হলে তিনি শিশুকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেন।

জিনিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমি ডাক্তারের কথায় বিশ্বাস করলে পলিথিনের মধ্যে আমার মেয়ে মরে পড়ে থাকত।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুর রহমান মালিক খোকন বলেন, সময় হওয়ার আগেই শিশুটি জন্ম নিয়েছে। তাকে ইনকিউবেটরের মধ্যে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আপাতত সে সুস্থ আছে। তবে এখনও সে ঝুঁকি মুক্ত নয়।