নিউজ ডেস্ক : জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, ‘উন্নয়নের পথে বিশেষ করে এজেন্ডা ২০৩০ অর্জনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে এমন সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অবশ্যই শক্তিশালী বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে হবে।’
৭৪তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দ্বিতীয় কমিটির সাধারণ বিতর্কে অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশন।
এক্ষেত্রে রাষ্ট্রদূত ওডিএ (উন্নয়ন সহযোগিতা) বাণিজ্য, সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে দেশসমূহকে পারস্পরিকভাবে আরও অধিক সহযোগিতার আহ্বান জানান।
এছাড়া উত্তর-দক্ষিণ সহযোগিতার পরিপূরক হিসেবে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা কাঠামোর সকল সুবিধা ও সম্ভাবনা পূর্ণমাত্রায় কাজে লাগানোর প্রতিও গুরুত্বরোপ করেন মাসুদ বিন মোমেন।
উন্নয়ন ও সফলতা অর্জনে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব, সাহসী ও সুদৃঢ় উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং জন-কেন্দ্রিক উন্নয়ন নীতিমালার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘সমগ্র-সমাজ দৃষ্টিভঙ্গি’র কারণে বাংলাদেশ আজ শক্তিশালী আর্থ-সামাজিক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে।
দারিদ্র্য বিমোচন, টেকসই প্রবৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনে সুরক্ষা, মানব-সম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিক্রমার নানাদিক তুলে ধরেন স্থায়ী প্রতিনিধি। তার বক্তব্যে উঠে আসে মাথাপিছু জাতীয় আয়, রফতানি, বৈদেশিক বিনিয়োগ, শক্তিশালী বেসরকারি খাত সৃষ্টি, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে অসমতা দূর, লিঙ্গ সমতা, সার্বজনীন ও উন্নত স্বাস্থ্য সেবা, মানসম্মত শিক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষায় শতভাগ ভর্তি, বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ, শিক্ষাবৃত্তি ও ভাতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা সরকারের ব্যাপক সাফল্যগাথার নানা তথ্য-চিত্র।
ডিজিটাল বাংলাদেশের সফলতার বিষয়টি তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, প্রযুক্তিতে সকলের সমান প্রবেশাধিকার নিশ্চিতের মাধ্যমে সরকার মানব মূলধন তৈরি করছে। দেশব্যাপী স্থাপন করা হয়েছে পাঁচ হাজার ৮০০ ডিজিটাল সেন্টার যা জনগণের দোরগোড়ায় প্রায় ৬০০ ধরনের ই-সেবা পৌঁছে দিচ্ছে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ তার প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করেছে উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, এটি সম্প্রচার-ভিত্তিক সেবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেয়াসহ যোগাযোগ উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে।
স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পসমূহ অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়া।
বাংলাদেশ যাতে উন্নয়নের এ অদম্য অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে পারে সেজন্য রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আরও উদার ও সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দ্বিতীয় কমিটি সদস্য দেশসমূহের উন্নয়নের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে সম্পর্কিত এমন অর্থনৈতিক ও আর্থিক বিষয়সমূহ নিয়ে কাজ করে।