নিউজ ডেস্ক : ক্রিকেটের সঙ্গে ক্যারম খেলার যে সমন্বয় করা যায়- তা সর্বপ্রথম দেখিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার রহস্য স্পিনার অজান্তা মেন্ডিস। ক্যারমের স্ট্রাইকারে টোকা দেয়ার মতো আঙুলের টোকায় বল করার অভিনব পদ্ধতি বের করে ‘ক্যারম বলে’র জনকই হয়ে গিয়েছিলেন ৩৪ বছর বয়সী মেন্ডিস।
আজ থেকে প্রায় ১১ বছর আগে ২০০৮ সালে এমন অভাবনীয় এক ডেলিভারিতেই সারা ক্রিকেট বিশ্বে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন মেন্ডিস। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রহস্য উন্মোচন হয়ে গেলে, ব্রাত্য হয়ে পড়েন জাতীয় দলে। ২০১৫ সালে খেলেছেন সবশেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ।
এরপর থেকে টানা ৪ বছর চেষ্টা করেও পারেননি জাতীয় দলের দরজা খুলতে। যে কারণে নিজেকে ক্রিকেট থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন ৩৪ বছর বয়সী ডানহাতি রহস্য স্পিনার অজান্তা মেন্ডিস। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
শ্রীলঙ্কার জার্সিতে ২০০৮ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ১৯ টেস্ট, ৮৭ ওয়ানডে এবং ৩৯ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন মেন্ডিস। সাদা পোশাকে তার ঝুলিতে রয়েছে ৭০ উইকেট, টি-টোয়েন্টিতে মেন্ডিসের শিকার ৬৬ উইকেট। আর সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলা ওয়ানডেতে মেন্ডিস উইকেটের উদযাপন করতে পেরেছেন ১৫২ বার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের তাদেরই মাটিতে ওয়ানডে ক্রিকেট দিয়ে অভিষেক হয়েছিল মেন্ডিসের। নিজের প্রথম ম্যাচে ৩৯ রানে নেন ৩ উইকেট। তবে উইকেটশূন্য থাকেন পরের দুই ইনিংসে। এরপর পাকিস্তানের মাটিতে হওয়া এশিয়া কাপে ক্রিকেট দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দেন মেন্ডিস।
ভারতের ফাইনাল ম্যাচে মাত্র ১৩ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেটসহ ৫ ম্যাচে নেন ১৭টি উইকেট। মাত্র ১৯ ওয়ানডেতে ক্যারিয়ারের ৫০ উইকেট পূরণ করে গড়েন ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্রুততম ৫০ উইকেট শিকারের বিশ্বরেকর্ড, যা টিকে আছে এখনও। দুর্দান্ত এশিয়া কাপ কাটানোর পর, একই বছর ভারতের বিপক্ষে ডাক পেয়ে যান টেস্ট দলে।
নিজের প্রথম টেস্ট সিরিজেই ভারতের ব্যাটিং লাইনআপকে পাড়ার দল বানিয়ে দেন মেন্ডিস। ঘরের মাঠে ২-১ ব্যবধানে জয় পাওয়া সে সিরিজে ২৬টি উইকেট শিকার করেন তিনি। তবে এরপরের ১৬ টেস্টে মাত্র ৪৪ উইকেট করতে পেরেছেন এ স্পিনার। এছাড়া মেন্ডিস কম যাননি টি-টোয়েন্টিতেও।
২০১২ সালের বিশ্ব টি-টোয়েন্টির উদ্বোধনী ম্যাচ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাত্র ৮ রানে শিকার করেন ৬টি উইকেট। যা কি-না এখনও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। ২০০৯ সালের বিশ্ব টি-টোয়েন্টিতে ৭ ম্যাচে ১২ এবং ২০১২ সালের আসরে ৬ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়ে দুইবারই লঙ্কানদের ফাইনালে খেলতে ভূমিকা রাখেন মেন্ডিস। এছাড়া বিশ্বের একমাত্র বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে দুইবার একই ম্যাচ ৬ উইকেট নেয়ার রেকর্ড রয়েছে তার দখলে।