নিউজ ডেস্ক : আফগানিস্তানের সংসদের সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করা এক খ্যাতিমান সাবেক নারী সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করার কয়েকদিনের মধ্যেই শনিবার সকালে রাজধানী কাবুলে মিনা মাঙ্গালকে গুলি করে হত্যা করা হয়, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ানের।
পুলিশের মুখপাত্র বশির মুজাহিদ জানিয়েছেন, মোটরসাইকেলে করে আসা দুই অজ্ঞাত ব্যক্তি পূর্ব কাবুলে নিজের বাড়ির কাছে মিনাকে গুলি করে হত্যা করেছে।
ওই সময় মিনা পার্লামেন্টের সংস্কৃতি বিষয়ক কমিশনের দপ্তরের পথে রওনা হয়েছিলেন।
মিনাকে হত্যার উদ্দেশ্য তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার না হলেও কাবুল পুলিশের আরেক কর্মকর্তা ফেরদৌস ফারাহমার্জ জানিয়েছেন, পারিবারিক বিরোধের কারণে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে থাকতে পারে।
আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসরাত রাহিমি বলেছেন, অজ্ঞাত হামলাকারীরা মিনাকে গুলি করেছে, পুলিশের একটি স্পেশাল ইউনিট ঘটনার তদন্তে নেমেছে।
টুইটারে পোস্ট করা এক ভিডিওতে নিহত মিনার মা সন্দেহভাজন খুনিদের নাম প্রকাশ করেছেন। এই লোকগুলো এর আগে মিনাকে একবার অপহরণ করেছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। অপহরণের ঘটনায় এদের সবাইকে গ্রেফতার করা হলেও ঘুষ দিয়ে তারা সবাই কারাগার থেকে বের হয়ে যান বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
রাজধানীর সড়কে প্রকাশ্য দিবালোকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আফগানিস্তানের নারী অধিকারকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। হুমকির মুখেও মিনাকে কেন অরক্ষিত রাখা হয়েছিল কর্তৃপক্ষের কাছে তার জবাব চেয়েছেন তারা।
আফগানিস্তানের মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী ও নারী অধিকার আন্দোলনকারী ওয়াঝমা ফ্রোঘ বলেছেন, “এই নারী ইতোমধ্যে তার জীবন নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন; তারপরও কিছু হলো না কেন? আমরা জবাব চাই? তাদের সঙ্গে মতের মিল না হলেই তারা নারীদের মেরে ফেলবে,এই সমাজে এটি এতো সহজ কেন?”
৩ মে এক ফেইসবুক পোস্টে নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন মিনা। তাকে হুমকি দিয়ে বার্তা পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, তিনি দেশকে ভালোবাসেন এবং আত্মপ্রত্যয়ী নারী হিসেবে তিনি মৃত্যুকে ভয় পান না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক আফগান মিনার ছবি শেয়ার করে হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।