নিউজ ডেস্ক : রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা বাংলাদেশ বিমানের কারণে সব অর্জন ম্লান হয়ে যেতে পারে বলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নতুন মন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামালকে সতর্ক করেছেন বিদায়ী মন্ত্রী রাশেদ খান মেমন।
বৃহস্পতিবার উত্তরসূরির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিদায়ী বক্তৃতায় মেনন বলেন, “আপনার একটা বক্তব্য টেলিভিশনে খুব জোরেশোরে প্রচার হচ্ছে। এটা ঠিক যে বিমান নিয়ে অনেক সঙ্কট আছে। এটা নিয়ে সবচেয়ে বেশি গালি খাবেন। বিমানের এমডি সাহেবের সামনেই বলছি, আমাদের যত অর্জন সব বিমানেই শেষ হয়ে যায়।”
মন্ত্রিসভার রদবদলে বুধবার বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় নতুন মন্ত্রী লক্ষ্মীপুরের এমপি কামালকে। আর চার বছর ধরে বিমানের দায়িত্বে থাকা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মেননকে পাঠানো হয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে।
এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকার সময় বিভিন্ন ঘটনায় সমালোচিত মেনন সমালোচনাকারীদেরও একহাত নিয়েছেন।
তিনি বলেন, “পরশু আমরা একনেকে আলাপ করেছি সিভিল এভিয়েশন নিয়ে, চলে আসল বিমান। দুই পক্ষ থেকে বেশ কথাবার্তা বলল, আমি চুপ করে শুনলাম।
“তোফায়েল সাহেব (বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ) এত বেশি সমালোচনা করলেন যে, উনি (প্রধানমন্ত্রী) বললেন- ‘আপনি দায়িত্ব নেন’; তখন তিনি (তোফায়েল) মাফ চেয়ে বলেছেন- ‘আমি দায়িত্ব নেব না’। এই ধরনের ঘটনাও হয়ে গেছে।”
মেননের চার বছরে দেশের প্রধান বিমানবন্দর শাহজালালের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে একাধিক ঘটনায়। নিরাপত্তা শঙ্কার কারণ দেখিয়ে যুক্তরাজ্য ২০১৬ সালের মার্চে ঢাকা থেকে আকাশপথে কার্গো বহনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যা এখনও ওঠেনি। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মুনাফা এ বছর কমে আসার পেছনে ওই নিষেধাজ্ঞাও ভূমিকা রেখেছে।
নতুন মন্ত্রীকে মেনন বলেন, “আপনি বিমান নিয়ে সঙ্কটে থাকবেন, কিছুটা এই সেন্সে যে লাগেজ দেরি হয়ে গেছে তিন ঘণ্টা। তবে আপনাকে এটা বলি, এই বোর্ড আসার পর প্রথম লাগেজ ২০ মিনিটে এবং শেষ লাগেজ ৮৫ মিনিটে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।
অন্যদেশে আধা ঘণ্ট হেঁটে ইমিগ্রেশন করতে হয়, আমাদের এখানে প্লেন থেকে নেমেই ইমিগ্রেশন ও প্লেন থেকে নেমেই লাগেজ। অন্য দেশে যে আধা ঘণ্টা হাঁটে, সেটা মনে থাকে না। এসেই বলে আমার লাগেজ নেই।
বিমানের কর্মীদের চাকরি ‘অত্যাবশ্যকীয়’ ঘোষণা করায় সিবিএ ‘অসন্তুষ্ট’ হয়ে আছে এবং সে কারণে নতুন মন্ত্রীর কাজে কিছুটা ‘অসুবিধা’ হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন বিদায়ী মন্ত্রী।
চার বছর আগে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে হাতে নেওয়া বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের তথ্যও বিদায়ের সময় বিস্তারিত তুলে ধরেন মেনন।
তিনি বলেন, “যখন প্রধানমন্ত্রী আমাকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিলেন তখন অনেকে আমাকে তাচ্ছিল্য করে বলেছিলেন, ‘একটা ডুবন্ত জাহাজ তোমাকে তুলতে দেওয়া হয়েছে’। আমি আজ তৃপ্ত মনে বিদায় নিচ্ছি এজন্য যে অন্তত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি।”
বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং এর অধীন সরকারি দপ্তরের কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে মেনন বলেন, “এই মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের যে গতি রয়েছে তা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং যে ভিত্তি তৈরি হয়েছে তার উপর সৌধ গড়ার কাজটি করতে পারবেন বলে বিশ্বাস করি।”
Be the first to comment on "শাহজাহান কামালকে সতর্ক করেছেন বিদায়ী মন্ত্রী রাশেদ খান মেমন"