নিউজ ডেস্ক : দুই মাসের মধ্যে পাঁচ কাটি টাকা বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে জমা দিলে তবেই জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মো. শওকত চৌধুরীর জামিন বহাল থাকবে।
তার জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ সংশোধন করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারকের আপিল বেঞ্চ সোমবার এই সিদ্ধান্ত দেয়।
নিম্ন আদালতের দেওয়া জামিন টিকিয়ে রাখতে এই সংসদ সদস্যকে ২৫ কোটি টাকা জমা দেওয়ার শর্ত দিয়েছিল হাই কোর্ট। এর বিরুদ্ধে শওকত চৌধুরীর লিভ টু আপিলের নিষ্পত্তি করে আপিল বিভাগ এই রায় দিল।
শওকত চৌধুরীর পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী এ এম আমিনুদ্দিন, নুরুল ইসলাম সুজন ও ফজলে নূর তাপস। সঙ্গে ছিলেন মো. মাসুদ রানা। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন খুরশীদ আলম খান।
আদেশের পর খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, “আদালত দুই মাসের মধ্যে পাঁচ কাটি টাকা জমা দিতে বলেছে। তা না হলে জামিন বাতিল হবে।”
অন্যদিকে মাসুদ রানা বলেন, “এর সঙ্গে জামিনের প্রশ্ন আছে। তবে পূর্ণাঙ্গ রায় না দেখে বলতে পারছি না।”
ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০১৬ সালের ৮ ও ১০ মে শওকত চৌধুরীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে বংশাল থানায় দুটি মামলা করে।
এর মধ্যে এক মামলায় ৯৩ কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার ২১৩ টাকা এবং আরেক মামলায় ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ৮১৫ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, শওকত চৌধুরী তিনটি কোম্পানির নামে ৩৪টি এলসি খুলে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের বংশাল শাখা থেকে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমডি ড. আসাদুজ্জামান, বংশাল শাখার ম্যানেজার হাবিবুল গণিসহ আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে ওই অর্থ আত্মসাৎ করেন।
বর্তমানে ওই অর্থের পরিমাণ সুদে-আসলে বেড়ে ১৩৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে বলে দাবি করেন কমার্স ব্যাংকের আইনজীবী সারোয়ার হোসেন।
এ দুই মামলায় গত বছর অাগস্টে হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন নেন শওকত চৌধুরী। পরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে আবারও জামিন পান।
এ অবস্থায় ওই দুই মামলার অপর দুই আসামি আসাদুজ্জামান ও হাবিবুল গণি জামিনের আবেদন করলে গত বছর ২৪ নভেম্বর তার শুনানিতে হাই কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে। শওকতকে নিম্ন আদালতের দেওয়া জামিন কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে।
ওই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ২২ অক্টোবর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাই কোর্ট বেঞ্চ শওকত চৌধুরীর জামিন বাঁচানোর জন্য ৫০ দিনের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে জমা দেওয়ার শর্ত ঠিক করে রায় দেয়।
এরপর শওকতের আবেদনে আপিল বিভাগ হাই কোর্টের ওই রায়ের কার্যকরিতা স্থগিত করে তাকে আপিলের আবেদন (লিভ টু আপিল) করতে বলে। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার সর্বোচ্চ আদালত হাই কোর্টের আদেশ সংশোধন করে জামিন বাঁচানোর নতুন শর্ত ঠিক করে দিল এমপি শওকতকে।
Be the first to comment on "৫ কোটি টাকা দিলে এমপি শওকতের জামিন বহাল থাকবে"