নিউজ ডেস্ক : ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক ছিলেন শক্তিশালী নেতা। তিনি ব্যবসায়িক নেতা হিসেবে ছিলেন সফল ও আদর্শবান। প্রধানমন্ত্রীর সুনজরে তিনি মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দিতা করে জয় লাভ করেন। তার নের্তৃত্বে ঢাকার চিত্র বদলে যেতে শুরু করেছিল। তার মতো শক্তিশালী নেতৃত্ব হারিয়ে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।’
প্রায় সাড়ে তিন মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর গত বৃহস্পতিবার মৃত্যুর পর আজ দুপুর ১ টায় ঢাকাস্থ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের মরদেহ। সেখানে উপস্থিত বিজিএমইএ ও এফবিসিসিআই এর নেতৃত্ব সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গার গেইটে অবস্থান বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মো. সিদ্দীকুর রহমান। বিজিএমইএ এর সাবেক প্রেসিডেন্ট আতিকুল ইসলাম।
এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, তিনি ছিলেন সফল ব্যবসায়িক নেতা। তার নেতৃত্ব ছিল আমাদের কাছে আদর্শের। তাকে যে কোনো সময় ডেকেছি পেয়েছি। তিনি সহযোগিতার মনোভাবপূর্ণ মানুষ ছিলেন।
তিনি বলেন, তিনি শুধু ব্যবসায়িক নেতা হিসেবে সফল ছিলেন না, তিনি সফর মেয়র হিসেবেও প্রমাণ রেখেছেন। কিন্তু আমরা তার অকালে চলে যাওয়ায় গভীরভাবে শোকাহত।
বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দীকুর রহমান বলেন, ঢাকাকে কিভাবে আবাসযোগ্য করা যায় সেই পরিকল্পনাই তিনি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মেয়র নির্বাচনে অংশ নেন। তার সে লক্ষ্য পূরণে তিনি সফল উদ্যোগী ছিলেন। রাস্তা নির্মাণ, রাস্তা প্রশস্তকরণ, ড্রেন করার কাজ তিনি সফলভাবে করে দেখিয়েছেন। তিনি দখলকৃত খাস জমি উদ্ধার করেছেন। বিশেষ করে তার গ্রিন ঢাকার স্বপ্ন বাস্তবায়নের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তবে গ্রিন ঢাকার সে স্বপ্ন পুরো বাস্তবায়ন না হতেই তিনি অকালে চলে গেলেন। তিনি মারা যান নি। বরং তিনি আমাদের মাঝে সব সময় বিদ্যমান। আমরা পদে পদে তাকে অনুভব করছি এবং করবো।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই নাতির জন্ম উপলক্ষে ব্যক্তিগত সফরে সপরিবারে যুক্তরাজ্য যান আনিসুল হক। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে ১৩ আগস্ট তাকে লন্ডনের ন্যাশনাল নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার মস্তিষ্কে প্রদাহজনিত রোগ ‘সেরিব্রাল ভাস্কুলাইটিস’ শনাক্ত করেন চিকিৎসকরা।
এরপর তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি ঘটলে তাকে গত ৩১ অক্টোবর আইসিইউ থেকে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়। গত সোমবার অবস্থার অবনতি হলে তাকে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার থেকে পুনরায় আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি মারা যান।
শুক্রবার বাদ জুমা আনিসুল হকের প্রথম জানাজা লন্ডনের রিজেন্ট পার্ক সেন্ট্রাল মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি, কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা অংশ নেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও জানাজায় উপস্থিত ছিলেন।
সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে এফবিসিসিআই-এর সভাপতি ছিলেন আনিসুল হক ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন।
Be the first to comment on "আমরা শক্তিশালী নেতৃত্ব হারালাম"