নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর দারুসসালাম থানার বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট সাব্বির আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বুধবার সাত দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনছারী তার স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
দারুস সালাম থানার আদালতের জিআর শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মিজান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ১ নভেম্বর তাকে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আহসান হাবীব পাইলট সাব্বিরকে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
৩০ অক্টোবর রাতে রাজধানীর মিরপুরের দারুসসালাম এলাকা থেকে তাদের আটক করে র্যাব। আটকের পর ৩১ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটের যাত্রীদের জিম্মি করে মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। বিমানের আগে সাব্বির রিজেন্ট এয়ারলাইন্সে পাঁচ বছর কাজ করে। সর্বশেষ সোমবার সন্ধ্যায়ও তিনি বিমানের ঢাকা-কলকাতা-ঢাকার একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেন।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত পাইলট সাব্বির এমাম সাব্বির (৩১) দারুসসালামের বর্ধনবাড়ি এলাকায় থাকেন। তিনি ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমি থেকে বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ নেন। ২০১০-১৪ পর্যন্ত রিজেন্ট এয়ারলাইন্সে চাকরি করেন। এ সময় স্পেন থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নেন তিনি। ২০১৪ সালে হতে অদ্যাবধি তিনি বাংলাদেশ বিমানের পাইলট হিসেবে চাকরিরত। তিনি দুবাই, কাতার, মাসকাট, সিঙ্গাপুর, মালেয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং দেশের আভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইট ছাড়াও অন্য আরও অনেক দেশে বিমানের পাইলট হিসেবে কাজ করেন।
সম্প্রতি র্যাবের ঘিরে রাখা দারুসসালামের আস্তানায় বিস্ফোরণে আবদুল্লাহর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল।
এছাড়াও নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা সারোয়ার জাহানের কাছ থেকে বায়াত গ্রহণ করেন সাব্বির। গুলশান হামলার আগে ও পরে আবদুল্লাহ, গ্রেফতারকৃত পাইলট সাব্বির, সারোয়ার একত্রে নাশকতার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গ্রেফতারকৃত পাইলট সাব্বির বিমান চালিয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের বাসভবনে আঘাতের অথবা বিমানের যাত্রীদের জিম্মি করে মধ্যপ্রাচ্যে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন। তার চাকরির ভাতা বাবদ ১০ লাখ টাকা পাওয়ার কথা ছিল এবং টাকাগুলো পেলেই সংগঠনে দান করবেন বলে আবদুল্লাহকে কথা দিয়েছিলেন তিনি।
মুফতি মাহমুদ আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত সাব্বির এমাম সাব্বিরের মতো দুর্ধর্ষ ব্যক্তি বাংলাদেশ বিমানের মতো সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত, যেখানে সর্বদা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের যাতায়াত। এ ধরনের একজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করে র্যাব বাংলাদেশকে কাছে ভবিষ্যতে আরও একটি নতুন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে। আগামীতে এ ধরনের সাফলতা ধরে রাখতে র্যাব বদ্ধপরিকর।
Be the first to comment on "পাইলট সাব্বিরের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি"