পঞ্চমবার ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার রোনালদো

Print Friendly, PDF & Email

নিউজ ডেস্ক : মঞ্চ সাজানোই ছিল। মঞ্চের মানুষগুলোও নতুন নয়, পুরাতন। গত ১০টি বছর ঘুরেফিরে এই মুখগুলোই আসছে সেই সাজানো মঞ্চে পুরস্কার নিতে। ২০০৮ থেকে শুরু করে এই ১০ বছর ফুটবল জগতকে বলতে গেলে দু’জন মানুষই শাসন করে গেলেন, তারা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এবং লিওনেল মেসি।

এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। নিয়মানুযায়ী এই সেরার আসনে তৃতীয় ব্যক্তি নেইমার ডি সিলভা জুনিয়র। এই সাজানো মঞ্চে তিনি আরও উঠেছিলেন। এবারও উঠলেন; কিন্তু তিনজনকে তো আর বিজয়ী করা যাবে না। বিজয়ী হবেন একজন। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং স্প্যানিশ লা লিগা জয়ের সঙ্গে জাতীয় দলের হয়েও দুর্দান্ত পারফরমার ছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সুতরাং, তাকে ছাড়া তো এই পুরস্কার কল্পনাই করা যায় না।

শেষ পর্যন্ত লিওনেল মেসি এবং নেইমারকে হারিয়ে পঞ্চমবারের মতো ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার জিতে নিলেন রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। একই সঙ্গে মেসির পাঁচবার বর্ষসেরা হওয়ার রেকর্ডেও ভাগ বসিয়ে দিলেন সিআর সেভেন। ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ানি ইনফ্যান্তিনোর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন রোনালদো। এ সময় মঞ্চে একসঙ্গে দাঁড়ানো ছিলেন ম্যারাডোনা এবং ব্রাজিলের রোনালদো।

জাতীয় দল এবং ক্লাবের হয়ে ২০১৭ সালের এ পর্যন্ত মোট ৪৪ গোল করেছেন রোনালদো। গত জুনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে জুভেন্টাসের বিপক্ষে একাই দুই গোল করেন তিনি। ক্লাবকে ১২তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ উপহার দেয়ার পাশাপাশি ৫৮ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়ালকে পরপর দুইবার ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্ব এনে দেন তিনি।

ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কার দেয়া হয় সাধারণত জানুয়ারিতে। ফিফার সদর দফতর জুরিখে। কিন্তু এবার জানুয়ারি নয়, ফিফা বর্ষসেরা অ্যাওয়ার্ড ঘোষণার তারিখ এগিয়ে আনা হয় অক্টোবরে। অ্যাওয়ার্ড নাইটের ভেন্যু লন্ডন। যেখানে আজ বসেছিল ফুটবল বিশ্বের সব রথি-মহারথির মেলা।

বর্তমান তারকা ফুটবলাররা তো এলোই। এসেছিলেন দিয়েগো ম্যারাডোনা, ব্রাজিলের রোনালদো, লুইস ফিগো, প্যাটট্রিক ক্লুইভার্ট, রুদ খুলিত, মার্সেল দেশাই, দিয়েগো ফোরলানসহ অনেকেই।

বিকেল থেকেই ওয়েস্ট মিনিস্টারে আসতে শুরু করেন তারকা ফুটবলাররা। লিওনেল মেসি আসেন তার স্ত্রী আনতোনেল্লা রোকুজ্জোকে সঙ্গে নিয়ে। রোনালদো আসলেন বান্ধবী জিওর্জিনা এবং ছেলে রোনালদো জুনিয়রকে নিয়ে। মঞ্চে ওঠার আগেই দেখা হয়ে যায় রোনালদো-মেসির। হাসি বিনিময় করে দু’জনই হ্যান্ডশেক করলেন। মঞ্চের সামনের সারিতেই পাশাপাশি বসলেন মেসি-রোনালদো। মাঝে ছিলেন মেসির স্ত্রী আনতোনেল্লা রোকুজ্জো।

২০০৮ সালে ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কার জিতেছিলেন রোনালদো। সেবার ব্যালন ডি’অর ছিল আলাদা। সেটাও জিতে নেন তিনি। এরপর ২০০৯ সালে ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার জেতেন মেসি। ব্যালন ডি’অরও ওঠে মেসির হাতে। ২০১০ সাল থেকে ফিফা বর্ষসেরা এবং ব্যালন ডি’অর এক হয়ে যায়। নামকরণ করা হয় ফিফা ব্যালন ডি’অর। টানা তিনবার এই পুরস্কার জেতেন লিওনেল মেসি।

২০১৩ সালে এসে আবারও ফিফা ব্যালন ডি’অর জেতেন রোনালদো। টানা দ্বিতীয়বার, অর্থাৎ ২০১৪ সালেও জেতেন সিআর সেভেন। ২০১৫ সালে এসে আবারও বর্ষসেরা হয়ে ফিফা ব্যালন ডি’অর জিতলেন মেসি। ২০১৬ সালে এসে ব্যালন ডি’অর আর ফিফার থাকলো না। ফ্রেঞ্চ সকার ম্যাগাজিন এর মালিক। তারা ফিরিয়ে নেয় ব্যালন ডি’অর।

যে কারণে ফিফা নতুন পুরস্কার চালু করে বর্ষসেরা ফুটবলারের জন্য। নামকরণ করা হয়, ফিফা দ্য বেস্ট ফুটবলার অ্যাওয়ার্ড। ২০১৬ এবং এবার, ২০১৭ সালে টানা দু’বার ফিফা দ্য বেস্ট অ্যাওয়ার্ড জিতলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।

নারী ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার হলেন হল্যান্ডের লিয়েকে মার্টেন্স। এছাড়া ডাচ নারী দলের কোচ সারিনা ওয়েইগম্যান হলেন বর্ষসেরা নারী কোচ।

Be the first to comment on "পঞ্চমবার ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার রোনালদো"

Leave a comment

Your email address will not be published.




2 × two =