রাখাইন বন্দরের ৭০ শতাংশ মালিকানা পাচ্ছে চীন

Print Friendly, PDF & Email

নিউজ ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অন্তর্গত বঙ্গোপসাগরে নির্মিত হতে যাওয়া কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি গভীর সমুদ্র বন্দরের ৭০ শতাংশ মালিকানা পেতে যাচ্ছে চীন।

ওই বন্দর নির্মাণ প্রকল্প দেখভালের দায়িত্বে থাকা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও মংয়ের বরাতে রয়টার্স ও নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে এ তথ্য জানা গেছে।

খবরে বলা হয়, প্রাথমিক চুক্তিতে চীনকে কিয়া কিউ নামে ওই বন্দরের ৮৫ শতাংশ মালিকানা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মিয়ানমারের আপত্তির কারণে শেষ পর্যন্ত তা কমিয়ে ৭০ শতাংশ করা হয়।

ও মং বলেন, প্রায় ৭ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ওই গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ বিষয়ে চীনের সিআইটিআইসি গ্রুপের নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে আলোচনায় শেয়ার বাড়ানোর চেষ্টা করছে মিয়ানমার। গত সেপ্টেম্বর দু্ই দেশের মধ্যে এই চুক্তি হয়।

তিনি আরও জানান, নতুন প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য মিয়ানমারের ভাইস প্রেসিডেন্ট হেনরি ভ্যান থিওরের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে প্রকল্পে অর্থায়ন নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

এরআগে গত মে মাসে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সিআইটিআইসি গ্রুপ কিয়া কিউ বন্দরের ৭০ থেকে ৮৫ শতাংশ মালিকানা চেয়েছে। আলোচিত ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই গুরুত্বপূর্ণ বন্দরের মালিকানা পেতে আগ্রহী চীন।

চীন ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড বাস্তবায়নের মাধ্যমে এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার দেশগুলোকে একটি বাণিজ‌্য ও অবকাঠামো নেটওয়ার্কে আনতে চায়। এর মাধ্যমে মূলত প্রাচীন সিল্ক রুট নতুন করে চালু হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্য থেকে জ্বালানি আমদানির জন্য মালাক্কা প্রণালী বাদ দিয়ে বিকল্প পথের জন্য বঙ্গোপসাগরের কিয়া কিউ বন্দর পেতে আগ্রহী চীন। এখানে চীনা তেল ও গ্যাস পাইপলাইনের সূচনা স্থল হবে। এছাড়া রাখাইনে একটি স্পেশাল ইকোনোমিক জোন তৈরি করতে চায় চীন।

এদিকে, রোহিঙ্গা নির্মূলে রাখাইনে চলমান সেনা অভিযানের তেমন প্রভাব নেই কিয়া কিউ বন্দর অঞ্চলে। এটি রাখাইনের দক্ষিণাংশে অবস্থিত।

গত ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া রোহিঙ্গা নিধনের বিরুদ্ধে বিশ্বনেতারা সোচ্চার হলেও চুপ রয়েছে চীন। এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ইস্যু দাবি করে কার্যত সেনা কর্তৃত্বে থাকা অং সান সুচির সরকারকেই নীরব সমর্থন দিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ব্যক্তিগত স্বার্থ ও অর্থনৈতিক লাভের হিসাব-নিকাশের কারণেই মিয়ানমারের পাশে রয়েছে চীন। রাখাইনে বন্দরের ৭০ শতাংশ মালিকানার বিষয়টি রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে চীনের সে অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।

 

Be the first to comment on "রাখাইন বন্দরের ৭০ শতাংশ মালিকানা পাচ্ছে চীন"

Leave a comment

Your email address will not be published.




19 − 9 =