নিউজ ডেস্ক : রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাসিন্দাদের ফিরিয়ে নিতে আলোচনা চলছে জানিয়ে তাতে সাফল্য পাওয়ার আশার কথা বলেছেন অং সান সু চি।
বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর সু চি এ কথা বলেন। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সু চির ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
মিয়ানমার স্টেট কাউন্সিল অফিস এর ফেইসবুক পাতায় ভাষণের ইংরেজি অনুবাদ পোস্ট করা হয়েছে।
সু চি বলেন, “আরও কার্যকরভাবে মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য আমরা আমারদের সক্ষমতা বাড়াব। যারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তাদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছি।
“স্বাধীনতার পর আমরা দুইবার এ বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সফল আলোচনা করেছি। ওই সাফল্যের উপর ভিত্তি করেই এখন আমরা তৃতীয় বারের মত আলোচনা করছি।”
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের আলোচনা এগিয়ে নিতে আগামী ২৩ অক্টোবর মিয়ানমার যাচ্ছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
গত ২৪ অাগস্ট রাতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের একটি দল রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর স্থাপনায় হামলা চালালে নতুন করে দমন অভিযান শুরু হয়।
জাতিসংঘের হিসাবে ওই অভিযান শুরুর পর সোয়া পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং সেই জনস্রোত এখনও চলছে।
জাতিসংঘ মিয়ানমারের সেনাদের এ অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ বলে বর্ণনা করেছে। রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকেও মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
এ বিষয়ে সু চি বলেন, “আমাদের দেশের বিরুদ্ধে অনেক সমালোচনা হচ্ছে। আমাদের আন্তর্জাতিক মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। যদিও আমাদের দেশের প্রকৃত অবস্থা আমাদের চেয়ে ভালো আর কেউ বুঝবে না। অন্য কেউই আমাদের মত করে আমাদের দেশের শান্তি ও উন্নয়ন কামনা করবে না।”
রাখাইন রাজ্যে পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন কার্যক্রম নিয়ে মিয়ানমার সরকারের কর্মপরিকল্পনা জানিয়ে ভাষণে তিনি বলেন, “যারা বাংলাদেশ থেকে ফিরে আসবে শুধু তাদের নিয়ে কাজ করলেই হবে না, বরং দাইং-নেত ও মাইওর মত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, রাখাইন জাতি ও হিন্দুদের নিয়েও আমাদের কাজ করতে হবে। তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করতে হবে।”
আগামীতে ওই এলাকায় সহিংসতা বন্ধ করে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশপাশি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর জীবনমানের উন্নয়নের একটি টেকসই পথ খোঁজার কথাও সু চি বলেন।
তিনি বলেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অনেক কাজ করতে হবে এবং মিয়ানমারের উদ্যোক্তা, এনজিও ও জনগণ এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
“আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও সহায়তা ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে শুরু করেছে। এটা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেন্দ্রীয় সরকার এবং আঞ্চলিক সরকার এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ বিষয়ে দেশে এবং দেশের বাইরে থেকে সহযোগিতার আন্তরিক প্রস্তাবগুলো যথাযথ সম্মান ও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।”
Be the first to comment on "রোহিঙ্গা সঙ্কট : আলোচনা নিয়ে আশাবাদী অং সান সু চি"