ইংরেজি পরীক্ষায় ফেল পাকিস্তান!

Print Friendly, PDF & Email

স্পোর্টস রিপোর্টার : ওয়ানডে বিশ্বকাপের পরে এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও জিতল ইংল্যান্ড। মেলবোর্নে ফাইনালে পাকিস্তানকে হারালেন জস বাটলাররা। প্রথমে বল করে মেলবোর্নের উইকেট কাজে লাগিয়ে ভাল বল করলেন ইংল্যান্ডের বোলাররা। নিয়মিত ব্যবধানে পাকিস্তানের উইকেট পড়ল। ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৩৭ রান করতে পারলেন বাবর আজ়মরা। রান তাড়া করতে নেমে ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে গেলেন বাটলাররা। অর্ধশতরান করলেন বেন স্টোকস। ২০১০ সালের পরে আরও এক বার ২০ ওভারের বিশ্বকাপ জিতল ইংল্যান্ড। ৩০ বছর আগের দুঃখ ঘুচল ইংরেজদের। ইমরান খান হতে পারলেন না বাবর আজ়ম।

টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বাটলার। তাঁর সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণিত করেন দলের বোলাররা। প্রথম থেকেই ঠিক লাইন-লেংথে বল করছিলেন বেন স্টোকস, ক্রিস ওকসরা। পাকিস্তানকে প্রথম ধাক্কা দেন স্যাম কারেন। ১৫ রানের মাথায় মহম্মদ রিজ়ওয়ানকে সাজঘরে পাঠান তিনি। তিন নম্বরে নেমে আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করেন মহম্মদ হ্যারিস। কিন্তু সফল হতে পারেননি। ৮ রান করে তাঁকেও ফিরতে হয়।

দু’উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে জুটি বাঁধেন অধিনায়ক বাবর ও শান মাসুদ। চার, ছক্কা কম হলেও মেলবোর্নের বড় মাঠ কাজে লাগিয়ে দৌড়ে রান তুলছিলেন তাঁরা। ভাল দেখাচ্ছিল বাবরকে। কিন্তু ৩২ রানের মাথায় আদিল রশিদের গুগলি বুঝতে পারলেন না তিনি। বোলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন পাক অধিনায়ক। পরের ওভারেই শূন্য রানে আউট হয়ে যান ইফতিকার আহমেদ। ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান।

সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন শান মাসুদ ও শাদাব খান। বেশ কয়েকটি বড় শট খেলেন তাঁরা। এ বারের বিশ্বকাপে নিজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেন শান। কিন্তু ডেথ ওভারে ছন্দপতন হল পাকিস্তানের। পর পর উইকেট পড়ল। ৩৮ রানে আউট হলেন শান। শাদাব করলেন ২০ রান। বাকিরা কেউ রান পাননি। শেষ পাঁচ ওভারে মাত্র একটি চার মারতে পেরেছেন পাক ব্যাটাররা।

২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৭ রানে শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস। ইংল্যান্ডের হয়ে স্যাম কারেন ও আদিল রশিদ দারুণ বল করলেন। কারেন ১২ রান দিয়ে ৩ ও রশিদ ২২ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। ক্রিস জর্ডনও শেষ দিকে ২ উইকেট তুলে নেন।

জবাবে ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভাল হয়নি। ভারতের বিরুদ্ধে ভাল খেললেও ফাইনালে মাত্র ১ রানে আউট হন অ্যালেক্স হেলস। নিজের প্রথম ওভারে দুর্দান্ত ইয়র্কারে তাঁকে সাজঘরে ফেরান শাহিন। কিন্তু অপর প্রান্তে বাটলারকে দেখে মনে হচ্ছিল, ভারতের বিরুদ্ধে যেখানে শেষ করেছিলেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেখান থেকেই শুরু করেছেন। নাসিম শাহকে এক ওভারে চারটি চার মারেন তিনি। পাকিস্তানকে খেলায় ফেরান হ্যারিস রউফ। প্রথমে ১০ রানের মাথায় ফিলিপ সল্ট ও তার পরে ২৬ রানের মাথায় বাটলারকে আউট করেন তিনি।

বাটলার আউট হলেও চাপে পড়েনি ইংল্যান্ড। বেন স্টোকস ও হ্যারি ব্রুক জুটি বাঁধেন। যে ভুল পাকিস্তানের ব্যাটাররা করেছিলেন সেই ভুল তাঁরা করেননি। বল দেখে খেলছিলেন। অহেতুক ঝুঁকি নেননি। ধীরে ধীরে লক্ষ্যের কাছে যাচ্ছিলেন তাঁরা। পাকিস্তানের বোলাররা চেষ্টা করছিলেন এই জুটি ভাঙতে। নাসিম এক ওভারে রান কম দেন। চাপ কিছুটা বাড়ায় পরের ওভারে শাদাবকে বড় শট মারতে গিয়ে শাহিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ব্রুক। তিনি করেন ২০ রান। পরের ওভারে স্টোকসকে রান আউটের সুযোগ ফস্কান শাদাব।

শেষ দিকে রানের গতি একেবারে কমে যায় ইংল্যান্ডের। নাসিম, হ্যারিসদের বলে ব্যাট ছোঁয়াতে পারছিলেন না স্টোকস। দেখে বোঝা যাচ্ছিল চাপে পড়ে যাচ্ছেন তিনি। শেষ পাঁচ ওভারে জিততে দরকার ছিল ৪১ রান। বল করতে আসেন শাহিন। কয়েক ওভার আগেই ক্যাচ ধরতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন তিনি। ফলে বল করতে যাওয়ার সময় খোঁড়াচ্ছিলেন। এক বল করেই উঠে যান শাহিন। বড় ধাক্কা খায় পাকিস্তান। শাহিনের ওভার শেষ করেন ইফতিকার। শেষ দু’বলে একটি চার ও একটি ছক্কা মারেন স্টোকস। ওই দু’বলেই খেলার ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যায়।

তার পরে আর আটকানো যায়নি ইংল্যান্ডকে। শেষ পর্যন্ত ৬ বল বাকি থাকতে ম্য়াচ জিতে যায় ইংল্য়ান্ড। ৫২ রান করে অপরাজিত থাকেন স্টোকস।