নিউ ইয়র্ক থেকে ঢাকার পথে প্রধানমন্ত্রী

Print Friendly, PDF & Email

নিউজ ডেস্ক : জাতিসংঘের ৭৪ তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশন উপলক্ষে নিউ ইয়র্কে আট দিনের সরকারি সফর শেষে ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল(নিউ ইয়র্ক সময় রবিবার রাত ১১টা)য় প্রধানমন্ত্রী ও তার সফর সঙ্গীদের বহনকারী ইতিহাদ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট (ইওয়াই-১০০) আবুধাবির উদ্দেশে জনএফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়েছে।
আবুধাবিতে যাত্রাবিরতির পর বিমান বাংলাদেশে এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে মঙ্গলবার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে পৌঁছান শেখ হাসিনা। গত শুক্রবার জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে তিনি রোহিঙ্গা সঙ্কটের মাত্রা অনুধাবন করতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে তাগিদ দেন।
ওই দিনই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠক হয়। এছাড়া এই সফরে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও নেদারল্যান্ডসের রানী ম্যাক্সিমার সঙ্গেও তার বৈঠক হয়।
যুক্তরাষ্ট্র সফরে এবার দুটি সম্মাননা পেয়েছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচির সাফল্যের জন্য গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাক্সিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই) তাকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ সম্মাননায় ভূষিত করেছে।
আর তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে জাতিসংঘ শিশু তহবিল- ইউনিসেফ তাকে ভূষিত করেছে ‘চ্যাম্পিয়ন অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ’ সন্মাননায়।
প্রধানমন্ত্রী ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মহাসচিব আয়োজিত মধ্যাহ্ণ ভোজে অংশ নেন; যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানেও যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সঙ্গে যৌথভাবে ‘ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ’ বিষয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বহুপক্ষীয় প্যানেল আলোচনাও পরিচালনা করেন শেখ হাসিনা।
তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ হলে ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটে বক্তব্য দেন এবং রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন এবং ওআইসি সচিবালয় আয়োজিত নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেন, যেখানে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর মাহাথির মোহাম্মদও উপস্থিত ছিলেন।
ইউএস চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত এক মতবিনিময় সভা এবং মধ্যাহ্ন ভোজেও অংশ নেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
এবার নিউ ইয়র্ক সফরে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন লোটে নিউ ইয়র্ক প্যালেস হোটেলে। মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস সেখানে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষৎ করেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত-আইসিসির প্রসিকিউটর ফাতো বেনসুদা, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি এবং ইউনেস্কোর সাবেক মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভাও আলাদাভাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
এছাড়া এক্সন মবিল এলএনজি ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান অ্যালেক্স ভি ভলকোভও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।
নিউইয়র্ক সফরের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এবং ন্যাশনাল অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল অব নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম অব বাংলাদেশের চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম নিউ ইয়র্ক সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গী ছিলেন।
এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান ও প্রেস সচিব ইহসানুল করিমও ছিলেন সফরসঙ্গী হিসেবে।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক ছাড়াও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত ও একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু প্রধানমন্ত্রীর সফরে সঙ্গে ছিলেন।