রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন : জাতিসংঘ ‘কঠিন সিদ্ধান্ত’ গ্রহণ করবে আশা কাদেরের

Print Friendly, PDF & Email

নিউজ ডেস্ক : রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে জাতিসংঘ ‘কঠিন সিদ্ধান্ত’ গ্রহণ করবে বলে আশা করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

রবিবার কক্সবাজারের হোটেল কক্স টু ডেতে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য দেওয়া ত্রাণ গ্রহণ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।

কাদের বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য জাতিসংঘ কাজ করছে। রোহিঙ্গারা যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মর্যাদা ও আত্মসম্মানের সঙ্গে তাদের দেশে ফিরে যেতে পারে, জাতিসংঘ সেই ব্যবস্থা করবে বলে প্রত্যাশা করছে সরকার।

“জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে কঠিন বাস্তবতার মুখে কঠিন সিদ্ধান্ত নেবে এটা আমাদের অভিপ্রেত।”

রাখাইন রাজ্যের গ্রামে গ্রামে নির্বিচারে হত্যা, জ্বালাও-পোড়াওয়ের মধ্যে গত ২৫ অাগস্ট থেকে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নে আরও চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে।

বাংলাদেশ বরাবরই বলে আসছে, মানবিক কারণে আপাতত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হলেও তাদের অবশ্যই মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে হবে। এ সমস্যার পেছনে বাংলাদেশের কোনো ভূমিকা নেই; সমস্যার সৃষ্টি ও কেন্দ্রবিন্দু মিয়ানমারে, সমাধানও সেখানে নিহিত।

আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার মধ্যে মিয়ানমার ১৯৯২ সালের প্রত্যাবাসন চুক্তির আওতায় দ্বিপক্ষীয় ব্যবস্থাপনায় রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলেছে। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘকে যুক্ত করাসহ কয়েকটি প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশের প্রস্তাবের কোনো জবাব না দিয়েই গত ৩১ অক্টোরব রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে দেরির জন্য উল্টো বাংলাদেশকে দোষারোপ করেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর সু চির দপ্তরের মহা পরিচালক জ তাই।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিমন হেনশ শনিবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা মিয়ানমার সরকারেরই দায়িত্ব বলে তার দেশ মনে করে।

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ বিষয়ে বলেন, “নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে মিয়ানমার এখন আবোল তাবোল বলছে।”

তিনি বলেন, “হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারীকে ধর্ষণ, নির্যাতন করা হয়েছে। মিয়ানমারের এই চিত্র একাত্তরের গণহত্যাকেও হার মানায়। এটা একেবারেই জেনোসাইড। এটা জাতিগত নিধন…।”

রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা না করায় বিএনপির রাজনৈতিক সৌজন্যবোধ ‘প্রকট হয়ে উঠেছে’ বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, “সারা বিশ্বের মানুষ যেখানে শেখ হাসিনার প্রশংসা করছে, সেখানে শুধুমাত্র বাংলাদেশের একটি রানৈতিক দল ও দলের প্রধান একটা ধন্যবাদও দিল না।

“তারা এখানে এসে দুদিন ফটোসেশন করে চলে গেছেন। খালেদা জিয়া এসে সাত দিন মানুষকে ভুগিয়েছেন।”

এ অনুষ্ঠানে আল্লামা ফজলুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবু রেজা চৌধুরী নদভীর দেওয়া সাড়ে পাঁচ হাজার সোলার লাইট, সাতকানিয়া সমিতির ৫০ ইউনিটের সোলার প্যানেল এবং চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের দেওয়া তিন লাখ টাকার চেক গ্রহণ করেন কাদের।

আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম ও বিপ্লব বড়ুয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Be the first to comment on "রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন : জাতিসংঘ ‘কঠিন সিদ্ধান্ত’ গ্রহণ করবে আশা কাদেরের"

Leave a comment

Your email address will not be published.




seven − two =